- হোম
- >
- ইতিহাস-ঐতিহ্য
- >
- হারিয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী ‘পালকি’
হারিয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী ‘পালকি’
‘বাক বাকুম পায়রা, মাথায় দিয়ে টায়রা, বউ সাজবে কাল কি, চড়বে সোনার পালকি’। রোকনুজ্জামান খানের এই ছড়াটিতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি সংস্কৃতির কথা মরে করিয়ে দেয়। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন হারিয়ে গেছে গ্রামীন জনগোষ্ঠির ঐতিহ্যবাহী বাহন পালকি। সাথে সাথে হারিয়ে গেছে পালকিবহর পেশার সাথে জড়িত বেহারা পেশা।
আগের মতো এখন আর পালকির ব্যবহার চোখে পড়ে না। এক সময় গ্রামীন জনপদে বসবাসকারি জনগোষ্ঠির বিয়ে অনুষ্ঠানে এবং আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে স্বাচ্ছন্দে বেড়ানোতে পালকির প্রাধান্য ছিল। বিয়েতে পালকি ছাড়া বিকল্প কোন মাধ্যম ছিল না।
বিয়ে অনুষ্ঠানে পালকিতে চড়ে বর তার বরযাত্রীর বহর নিয়ে কনের বাড়িতে যাত্রা করতেন। কনের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ও খাওয়া-দাওয়া শেষে আবারো ওই পালকিতে করে নিয়ে আসতেন নববধূকে। কোন কোন পালকিতে বর ও কনেকে একসাথে বহন করে নিয়ে আসতেন বেহারারা।
বিয়েকে সামনে রেখে বরের বাড়িতে কমপক্ষে দুইদিন আগে আনা হত পালকি। পালকিকে রঙ্গীন কাগজের মাধ্যমে সাজ-সজ্জায় সৌন্দর্য্য মণ্ডিত করে রাখা হতো নববধূ আনার জন্য। বাড়ির আঙ্গিনায় কলাগাছ দিয়ে সাজানো হতো গেট। গেটে রং-বেরঙের কাগজ দিয়ে সাজিয়ে ‘বিয়ে বাড়ি’ লিখে রাখা হতো। কোন কোন এলাকায় দুই-একদিন আগ থেকে বিয়ে বাড়িতে মাইক বাজিয়ে জানান দেওয়া হতো। মাইকের আওয়াজ শুনে এলাকার যুবক-যুবতীসহ সর্বস্তরের লোকজন জড়ো হয়ে আনন্দ ফূর্তিতে মেতে উঠতো।
কালের পরিবর্তনে পালকির বিপরীতে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক বিভিন্ন যানবাহন। অতীতে গ্রামীন জনপদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বাড়িতেই সম্পন্ন হতো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রায় ৫০ ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান এখন কমিউনিটি সেন্টার ও অভিজাত চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সম্পন্ন হচ্ছে। বর্তমানে বিয়ের অনুষ্ঠানে পালকির কদর কমে যাওয়ায় এ পেশার সাথে জড়িত বেহারা শ্রমিকরা অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতি ছাতক উপজেলার দোলারবাজারে একটি পরিত্যক্ত দোকানের উপর বেঁধে রাখা একটি পালকি দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পালকি বহন পেশার সাথে জড়িত সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার এই পালকি বেহারা দীর্ঘদিন আগেই এই পেশা ছেড়ে দোলারবাজার থেকে চলে গেছেন। তিনি চলে গেলেও তার বহনকৃত পালকিটি স্মৃতি হিসেবে রেখে গেছেন দোলারবাজারে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।