- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- নড়াইলে দেশী গরু পালনে আগ্রহী বেকার যুবকরা
নড়াইলে দেশী গরু পালনে আগ্রহী বেকার যুবকরা
নড়াইলে বাণিজ্যিকভাবে দেশী গরু পালনের খামার বেড়েছে। বেড়েছে বিক্রির উদ্দেশ্যে গৃহস্থ পরিবারে গরু পালনের হার।
সূত্র জানায়, ভারত থেকে ঢালাওভাবে গরু আমদানি বন্ধ হওয়ায় জেলার অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এ খাতে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে চলতি বছর জেলায় ২১ হাজার দেশী জাতের গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত দিনগুলোতে জেলায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ক্ষুদ্র পরিসরে কিছু গরু পালনের খামার গড়ে উঠেছিল। এখন দেশী গরুর মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক উদ্যোক্তা খামার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছেন। জেলার কৃষকরাও বিক্রির উদ্দেশ্যে গরু পালন করছেন। জেলা সদর, কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ৩৫৫টি গরু পালনের খামার নিবন্ধিত করা হয়েছে। যার ২০৭টি সদর উপজেলায়, কালিয়ায় ৯৪টি এবং লোহাগড়ায় ৯৬টি। গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক বেশি। তাছাড়া কোনো কৃষি পরিবারে তিনটির বেশি গরু পালন করা হলে সেটা পারিবারিক খামার হিসেবে ধরা হয়। জেলায় এবার নিবন্ধনকৃত খামারের বাইরেও অনেক গৃহস্থ পরিবারে বিক্রির লক্ষে গরু পালন করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ২১ হাজার গরুর মধ্যে খামারে ৩৫ এবং গৃহস্থ পরিবারে বাকি ৬৫ শতাংশ গরু পালন হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, জেলা সদরের মির্জাপুর, চাকই, সিংগাশোলপু, গোবরা, কমখালি, শাহবাদ, সিমানন্দপুর, জুড়ুলিয়া, লোহাগড়ার শিয়েরবর, চাচই, কোলা, কুমড়ি, দীঘলিয়া, মল্লিকপুর, মাকড়াইল, লাহুড়িয়া এবং কালিয়ার বড়দিয়া, মহাজন, টোনা, খাশিয়াল, বাবরা গ্রামে খামার গড়ে উঠেছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ কৃষি পরিবার গরু মোটাতাজাকরণ করছে।
কৃষকরা জানান, তারা ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে একটি দেশী প্রজাতির বাছুর ক্রয় করেছেন। কৃষিকাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঠ ও বিল থেকে কাঁচা ঘাস কেটে এনে খাওয়ান। তাছাড়া খড়, খৈল, কুড়া এবং ভূষি খাওয়ানো হয়। বছর শেষে প্রতি গরুতে আকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুনাফার আশা করছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার তিন উপজেলায় ১১টি হাটে সারা বছরই গরু বেচাকেনা হচ্ছে। তবে মাইপাড়া, লোহাগড়া, শিয়েরবর এবং পুরুলিয়া গরুর হাট বড়। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এসব হাট থেকে সরাসরি গরু কিনে থাকেন। আর স্থানীয় বেপারিরা ছোট হাট ও বিভিন্ন গ্রামের গৃহস্থ পরিবার থেকে গরু কিনে বড় হাটগুলোয় নিয়ে আসেন।
পরিসংখ্যান বলছে- খামারি, কৃষক ও বেপারি মিলিয়ে জেলার ১৪ হাজার মানুষ এ পেশার যুক্ত।
জেলার খামারিরা জানান, এখন ঢালাওভাবে গরু আমদানি না হওয়ায় দেশী গরুর চাহিদা বাড়ছে। ফলে অনেক স্বল্পপুঁজির মালিক খামার করায় এগিয়ে এসেছেন। সরকার যদি বিদেশী গরু আমদানি বন্ধ রাখে তাহলে জেলায় দেশী গরুর খামার বাড়বে। তারাও ভালো দাম পাবেন।
নড়াইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. অমলেন্দু ঘোষ সাহস২৪.কম কে জানান, দু-তিন বছর আগে জেলার চাষীরা ক্ষুদ্র পরিসরে বিক্রির জন্য গরু পালন করতেন। এখন দেশী গরুর মাংসের চাহিদা বাড়ায় ও বিদেশ থেকে তুলনামূলকভাবে কম গরু আমদানি হওয়ায় জেলার স্বল্পপুঁজির মালিকরা খামার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছেন। সরকারিভাবে খামারিদের ৪৫-৫০ শতাংশ ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করাসহ গরু মোটাতাজাকরণে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
গত বছর জেলায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৫ হাজার ৭৭৪টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছিল। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।