অপহৃত ইমরানকে উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
রাজধানী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আসিফ ইমরানকে (১৯) উদ্ধারের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশ প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার সকালে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বহুমুখী সমবায় সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরানের পরিবারের সদস্যরা এই দাবি জানান।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইমরানের বাবা লুৎফর রহমান বলেন, গত বছর ৭ অক্টোবর উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে ইমরানের বন্ধু গোলাম মোস্তফা আদর পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেড়ানোর কথা বলে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান। এরপর থেকে ইমরান আর বাসায় ফেরেননি। সে সময় তিনি ও তার স্ত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে ছিলেন।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ৯ অক্টোবর আসিফের বড় বোন নাজিয়া কাজল উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এঘটনায় অপহরণের মামলা করতে গেলে থানায় প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকার করে। পরে আদালতের নির্দেশে ১ নভেম্বর ওই থানা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলমগীর ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা নেয়। অপর তিন আসামি হলেন গোলাম মোস্তফা আদর, গোলাম মোহাম্মদ কালু ও মো. শাকিল। গত নভেম্বরে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা ও শাকিল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি বলেন, আলমগীর ইসলামের পরিকল্পনা মতে তারা ইমরানকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে লুৎফর রহমান বলেন, চার আসামির তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর ইসলামের ভাতিজা রিয়াজুল ইসলাম ও রাফসান জানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের কিছুদিনের মধ্যেই রিয়াজুল ইসলাম জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। রাফসান জানিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্যরা কারাগারে আছেন।
এসময় লুৎফর রহমান বলেন, থানায় জিডি করার পর গোলাম মোস্তফা ও গোলাম মোহাম্মদ কালু ও মোবাইল ফোনে দুই দফায় ১০ লাখ ও ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন। তিনি বলেন, আসামিরা সব গ্রেপ্তার হলেও তার ছেলেকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারছে না। পুলিশ বলছে, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর ইসলামের লোকদের কাছেই ইমরান আছে। কেন উদ্ধার করা হচ্ছে না, এর কোনো জবাব দিতে পারছে না পুলিশ।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লুৎফর রহমান বলেন, একমাত্র ছেলে ইমরানকে হারিয়ে মা নাদিরা বেগম পাগলপ্রায়। দিনের পর দিন পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। এদিকে ইমরানের শোকে কয়েক দিন আগে তার দাদি মারা গেছেন। এ অবস্থায় ছেলেকে উদ্ধারে তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশ প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমরানের মা নাদিরা বেগম, বড় বোন নাজিয়া কাজল, খালু ফজলার হোসেন ও খালা রোকেয়া বেগম।
অপহৃত ইমরানের মামলাটি প্রথমে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ তদন্ত করে। পরে তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আতাউর রহমান চৌধুরী বলেন, আসামিরা জবানবন্দিতে বলেছেন, ইমরান ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীরের লোকদের হেফাজতে আছেন।
তথ্যপ্রযুক্তি ও পারিপার্শ্বিক তদন্তে জানা যায়, ইমরান এখনো আলমগীরের লোকদের কাছেই আছেন। তাকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।