উদীচীর জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতার ঢাকার পর্ব সম্পন্ন
আগামী ১ ও ২ এপ্রিল ২০১৬ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করতে যাচ্ছে “সপ্তম সত্যেন সেন গণসঙ্গীত উৎসব ও জাতীয় গণসঙ্গীত প্রতিযোগিতা’২০১৬”।
শুক্রবার এ প্রতিযোগিতার ঢাকা জেলা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে শুরু হয় বিভিন্ন বিভাগের প্রতিযোগিতা।
ক, খ, গ ও দলীয়- এই চারটি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। একক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে অনুর্ধ্ব-১২ বছর বয়সীরা ক বিভাগে, ১২ থেকে অনুর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীরা খ বিভাগে এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল প্রতিযোগী গ বিভাগের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। দলীয় প্রতিযোগিতা (ঘ বিভাগ)-এর ক্ষেত্রে কমপক্ষে চারজন শিল্পীর অংশগ্রহণ বাঞ্ছনীয় ছিল। এ প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গণসঙ্গীত শিল্পী ও সুরকার সেলিম রেজা, শাহীন সরদার এবং সোহানা আহমেদ।
প্রতিযোগিতা শুরুর আগে উদ্বোধনী পর্বে তিন বিচারককে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ, অমিত রঞ্জন দে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান ইকবাল। এসময় উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশর সভাপতিত্বে তিন বিচারক সেলিম রেজা, শাহীন সরদার, সোহানা আহমেদ এবং উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার আলোচনা করেন।
এবারের প্রতিযোগিতায় ঢাকা জেলা পর্বে ক বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সিদরাতুল মুনতাহা ঐশী, আর দ্বিতীয় হয়েছে নূর জাকিয়া প্রাপ্তি। খ বিভাগে প্রথম হয়েছে নূসরাত জাহান ঊষা এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ইয়ানূর আক্তার। গ বিভাগে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করে শ্রাবণী গুহ রায়। এ বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছেন মো. আল আমিন শরীফ। আর দলীয় অর্থাৎ ঘ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে উদীচী মিরপুর শাখা।
আগামী ১৮ মার্চ (শুক্রবার) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে আয়োজিত বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেলা পর্যায়ের বিজয়ীরা।
গণসঙ্গীতের প্রচার, প্রসার এবং একে একটি স্বতন্ত্র সঙ্গীতের ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রতিবছর গণসঙ্গীত উৎসব আয়োজন করে উদীচী। আগামী ১ এপ্রিল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। এর আগে দেশে ও বিদেশে জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা অংশ নেবেন বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। সেখানে যারা বিজয়ী হবেন তারা ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বিভাগীয় পর্যায়ে একক বিভাগগুলোর প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী এবং দলীয় বিভাগে শুধুমাত্র প্রথম স্থান অধিকারী দল জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।
প্রগতিশীল গণচেতনা সম্পন্ন জাগরণমূলক গান, শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের দু:খ-দুর্দশা এবং অধিকার সম্পন্ন সচেতনতামূলক গান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রামের, সমাজের অন্যায় অত্যাচার নিপীড়ন অবসানের দিক নির্দেশনামূলক, মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির, যুদ্ধবিরোধী-স্বৈরাচার বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ বিরোধী গান, বিশ্ব শান্তির পক্ষে, শোষণের বিরুদ্ধে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধের গানকে গণসঙ্গীত হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এছাড়া, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে রচিত ও সুরারোপিত নতুন গণসঙ্গীতসমূহ বেশি গুরুত্ব পাবে। স্থান-কাল ভেদে গণসঙ্গীতের ভিন্নতর ব্যাখ্যা থাকলেও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলোকে বিবেচনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের জন্মদিনকে উপলক্ষে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এবারের উৎসবের শ্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে-‘মানুষ জাগাও, স্বদেশ জাগাও, বিশ্ব জাগাও সঙ্গীতে’।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।