৫ লাখ টাকায় ভাড়েটে খুনি দিয়ে প্রবাসী স্বামীকে হত্যা
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর গ্রামের নোয়াহাটি এলাকার সৌদি প্রবাসী ময়নাল হোসেনকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে স্ত্রীর ভাড়াটে খুনিরা নির্মমভাবে খুন করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন তার স্ত্রী তাছরিমা বেগম।
নিহত ময়নল হোসেন উপজেলার আকুবপুর গ্রামের ফুল মিয়া হাজীর ছেলে।
৮নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহদ বিন আমীন চৌধুরীর আদালতে বৃহস্পতিবার বিকালে হাজির করার পর প্রবাসীর স্ত্রী তাছলিমা বেগম ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানা যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, বিদেশ থেকে পাঠানো স্বামীর অর্থ দিয়ে স্ত্রীর নামে কেনা সম্পত্তি এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়ে সন্দেহ থেকেই দাম্পত্য কলহ দেখা দেওয়ায় এবং এর জের ধরে ওই প্রবাসীকে হত্যা করা হয়।
তিনি আরও জানান, আদালতে দেওয়া তাসলিমার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত ঘাতকদের আটক এবং নিহতের লাশ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দীতে তাসলিমা জানান, ‘১ নভেম্বর রাতে ৫ লাখ টাকার চুক্তিতে ৬ জন সন্ত্রাসীকে ভাড়া করা হয়, এর মধ্যে রাতেই ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করার পর সন্ত্রাসীরা কৌশলে ওই প্রবাসীকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে উঠিয়ে খাল পাড়ে নিয়ে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়।
ডিবি পুলিশ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দী সূত্রে জানা যায়, ময়নল হোসেনের সাথে প্রায় ১০ বছর আগে একই উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের মেয়ে তাছলিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ২টি সন্তান রয়েছে। সৌদি যাওয়ার পর সকল অর্থ স্ত্রী তাছলিমার কাছে পাঠায় ময়নাল। এদিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা একই গ্রামের শরীফুল ইসলাম নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে ফেরার পর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বিদেশে থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে দাম্পত্য কলহ হয়। এতে তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৬ জন সন্ত্রাসীর সাথে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘাতকরা প্রবাসী ময়নালকে খুন করে লাশ খালে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী গত ৭ নভেম্বর মুরাদনগর থানায় স্বামী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরী করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন ‘তার স্বামী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি।’ এতে মুরাদনগর থানা পুলিশ জিডির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করলেও ঘটনার রহস্য বের করতে পারেনি।
পরে ওই প্রবাসী মা আমেনা খাতুনের কুমিল্লা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন। অভিযোগের সূত্র ধরে ডিবি পুলিশ এরই মধ্যে প্রবাসী ময়নালের স্ত্রীর নিকটাত্বীয় জাকির ও জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।