বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা খরচ হয়েছে জুয়ার আসরে
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরির টাকা খরচ হয়েছে ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে যদিও ঘটনাটি গত মাসের। কিন্তু ফিলিপাইনের পত্রিকা ইনকোয়ারার বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আর এর আগে ১০১ মিলিয়ন ডলার হ্যাকাররা নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখান থেকে শ্রীলংকার ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবেশ করা ২০ মিলিয়ন ডলার ফেরত আনা হয়েছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ঘটনাও অনেক আগের কিন্তু জানা গেল মাত্র ৭ মার্চ।
পত্রিকাটি বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, ওই ঘটনার মাত্র ক’দিন আগে ৮১ মিলিয়ন ডলার একই উৎস থেকে ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকিং সিস্টেমে ঢুকেছিল এবং তা রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) এক স্থানীয় ক্লায়েন্টের কাছে আসে। যে ঘটনায় এখনো তদন্ত চলছে। যেখান থেকে গ্রাহকের হাতে চলে যাওয়া টাকা একটি ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারের কাছে পাঠানো হয়েছিল এবং পরে তা সিটি অব ড্রিমস ও মিদাসের সোলেয়ার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সে অর্থগুলো জুয়ার আসরে নিয়ে বাজি ধরার উপযোগী করা হয়। আর শেষ পর্যন্ত আবার সেগুলোকে নগদ অর্থে পরিবর্তন করে হংকংয়ের একটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
৮৭০ মিলিয়ন ডলার চুরি বানচাল করার পর নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফিলিপাইনের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় মানিলন্ডারিংয়ের ঘটনা। তবে এ ঘটনা নাকি আরসিবিসি ব্যাংকের কর্মকর্তারা আগে থেকেই জানতেন।
ফিলিপাইনের এক সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের নেয়া টাকাগুলো স্থানীয় ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে জমা করেছেন চীনা বংশোদ্ভূত ফিলিপাইনের ওই ব্যবসায়ী। ব্যাংকটির ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দাবি, ২০১৫ সালের মে মাসে ম্যানেজারকে ৫টি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাই এ আদেশ দেন। এ ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো খুলতে গিয়ে আরসিবিসি ব্রাঞ্চের ম্যানেজারকে ৫টি আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়। যে কার্ডগুলোতে ব্যবহৃত পরিচয় ছিল কাল্পনিক। ঘটনা প্রকাশের পর এখন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তৈরি রয়েছেন বলে পত্রিকাটি তাদের খবরে প্রকাশ করেছে।
পত্রিকাটি দাবি করছে, চুরির টাকাগুলো নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে প্রথম যায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংকে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে- ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক এবং ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকে। তারা এই অর্থ পাঠায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে।
ফিলিপাইনের মাকাটি শহরের যে শাখায় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে, সেই শাখার প্রধান কর্মকর্তা বিষয়টি ব্যাংকের উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন।
এই লেনদেনের প্রত্যেকটি ধাপ সম্পর্কে এই ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আগাগোড়াই জানতেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লোরেনজো ট্যান তা অস্বীকার করছেন।
তথ্যসূত্র : ইনকোয়ারার
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।