নারীদের বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনে বাথরুমেই আটকে রাখা হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৯ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
সমতার সংকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাপী পালন করল ‘বিশ্ব নারী দিবস’।
এমন সময় এই দিবসটি পালন হচ্ছে, যখন বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে এবং কর্মক্ষেত্রে সম মজুরির জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। এছাড়া সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিরও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞাপনে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা খুবই বৈষম্যমূলক এবং নারীর জন্য অবমাননাকর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক শেখ মাহমুদা সুলতানা মনে করেন “নারীর অবস্থান এবং বিজ্ঞাপনগুলোতে তাদের যেভাবে দেখানো হয় তা কোনওভাবেই যৌক্তিক নয়। আপনি দেখবেন বিজ্ঞাপনগুলোতে নারীদের অবস্থান মূলত অন্দরমহলে। খেয়াল করে যদি দেখি তাহলে আমরা দেখি নারীদের বড় একটা অংশ বাড়ির পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ব্যস্ত আছেন”।
তিনি বলেন, “আক্ষরিক অর্থেই নারীদের বিজ্ঞাপনে মেঝে বা বাথরুম পরিস্কারের মধ্যেই আটকে রাখা হচ্ছে। নারী মডেলদের বেশিরভাগ অংশই দর্শকদের সামনে শারিরীকভাবে একদমই বাথরুমে অবস্থান করেন। এছাড়া একটি সম্মানজনক পরিসরে হয়তো তাদের দেখা যায় তা হলো বাড়ির রান্নাঘর বা ডাইনিং টেবিল। বাড়ির সদস্যদের কোনও একটি নির্দিষ্ট মসলা বা তেল দিয়ে রেঁধে খাইয়ে তারা অনেক প্রশংসা পান”।
আর বিজ্ঞাপনে পুরুষদের অবস্থান নিয়ে শেখ মাহমুদা সুলতান বলেন “বেশিরভাগ সময় দেখা যায় বিজ্ঞাপনে পুরুষেরা খাবার সামনে নিয়ে বসে আছেন, নারীটি দাড়িয়ে আছেন এবং তিনি খাবার বেড়ে দিচ্ছেন। নারী মূলত সেবা দিচ্ছেন”।
“অন্যের জন্য কিছু করতেই তিনি সবসময় ব্যস্ত আছেন এমন একটি ভূমিকাতেই তাদের আটকে থাকতে দেখি। সেটাতো আসলে কোনভাবে যৌক্তিক হতে পারেনা”।
তাহলে কি বিজ্ঞাপনে নারীর এমন উপস্থাপন সমাজে নারীর ভূমিকা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে?
শেখ মাহমুদা সুলতানা মনে করেন ‘এটি নেতিবাচক প্রভাবই’।
“কারণ গণমাধ্যম শেখানো ও প্রচারণার একটা ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমের বড় একটা কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা। তো সেদিক থেকে দেখতে গেলে গণমাধ্যম নারীকে যেভাবে দেখাচ্ছে বা দেখতে শেখাচ্ছে সেখানে নারীর সত্যিকারের অবস্থান উঠে আসছেনা। সমাজ বিকাশে নারীর যে অবদান সেটা স্বীকৃতি যেমন পাচ্ছেনা আমরা ভোক্তা শ্রেণীও নারীকে সেভাবেই দেখতে শিখছি। এটাতো নেতিবাচকই।
সুলতানা বলেন “সরকারের এক্ষেত্রে বড় করণীয় আছে। যেমন একটি নীতিমালা হতে পারে। আর নীতিমালা হলে আমরা বুঝতে পারবো সরকার আসলেই নারীকে পণ্য হিসেবে দেখতে চাননা। যারা এ বিজ্ঞাপন নির্মাণের সাথে জড়িত তাদের নিয়ে সরকার বসতে পারেন, ভোক্তা শ্রেণির সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে। আলোচনা তৈরি হলে সরকারের প্রয়াস নির্মাতা শ্রেণিও হয়তো আন্তরিকভাবে নিবেন এবং বদল ঘটানোর ব্যাপারে আন্তরিক চেষ্টা করবেন”।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।