- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- অসম্পূর্ণ বাঁধে অরক্ষিত বোরো ফসল
অসম্পূর্ণ বাঁধে অরক্ষিত বোরো ফসল
সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করা হলে ৪০ শতাংশ হলে বাকি ৬০ ভাগ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র দুর্নীতির কারণে জেলার ১১টি উপজেলার ছোট-বড় শতাধিক হাওরের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বোর ফসল অরক্ষিত রয়েছে। সময় মতো বাঁধের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অজানা আতঙ্ক।
জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকার বাঁধ পরিদর্শন করে পাউবোর প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পাউবোর দুর্নীতির কারণে অতীতেও বন্যায় হাজার হাজার কোটি টাকার পাঁকা বোর ফসল পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়।
জেলার প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোর ফসল। অতীতের মত এ বছরও ফসল রক্ষা বাঁধ সময়মতো সম্পন্ন হয়নি। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক।
জানা যায়, জেলার বোর ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের কাজ সরকারের নির্ধারিত সময়ের ৯দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও শতভাগের মধ্যে মাত্র ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে হাওরাঞ্চলের কৃষকরা দুশ্চিন্তা আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের হাত থেকে বোর ফসলকে কিভাবে বাঁচাবে।
২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে গেল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৮৫ দিন সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণে সরকারের নির্দেশনা ছিলো। নির্ধারিত সময় সীমার ৮দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় জেলার কয়েক লক্ষ কৃষক বোর ফসলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন।
জেলার ছোট বড় শতাধিক হাওয়রে ১ হাজার ৫ শত কিলোমিটিার ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে। চলতি বছরে ৪০টি হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ৪৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা সরকার বরাদ্দ হয়। এতে স্থানীয়দের নিয়ে ২শ’২১টি প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছিল। প্রতিটি পিআইসি সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ টাকার কাজের নির্দেশনা ছিলো। পিআইসি’র মাধ্যমে ১৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হাওরের বাঁধের ভাঙ্গা অংশ মেরামত এবং ঠিকাদারদের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন বাঁধ নির্মাণ ও পুরাতন বাঁধ উঁচু করণের কাজ গেল বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ ৬০/৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে পাউবো দাবি করলেও জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের দাবি ৪০ ভাগ কাজও এখন পর্যন্ত হয়নি।
পাহাড়ি ঢল ও অকাল বন্যার হাত থেকে হাওরের বোর ফসল রক্ষা করতে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিলেও দুর্নীতির কারণে পাঁকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়।
হাওর পাড়ের রনশি গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন ও সাঈদুর রহমান জানায়, দেখার হাওরের হাওর রক্ষা বাঁধ যেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো দুর্বল ও নিম্নমানের। সামান্য বৃষ্টিপাত হলে বাঁধ ভেঙ্গে যাবে। এতে দেখার হাওর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছাতকের কামরাঙ্গী গ্রামের কৃষক ঝিনুক মিয়া জানান, হাওরের ক্ষেতে অনেক কষ্ট ও টাকা খরচ করে ধান গাছ লাগিয়েছেন। হাওরের অনেক বাঁধে এখনো এক ছিমটি মাটিও পড়েনি এবং যেগুলোতে কাজ হয়েছে প্রায় সবগুলো নিম্নমানের।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।