আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৮ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
জাতিসংঘ ঘোষিত ২০১৫ সালে নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান’। প্রতিপাদ্য এ বিষয়কে সামনে নিয়ে সারা বিশ্বের মতো আজ বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৬। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের নারীরা আজ শুধু গার্মেন্ট শিল্পেই নন, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যবসা, উদ্যোক্তা, সাংবাদিকতা, এভারেস্ট জয়, খেলা, সৃষ্টিশীল এমনকি যুদ্ধ বিমান চালনাতেও একে একে নিজেদের দক্ষতা, যোগ্যতা আর গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ রেখে চলেছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পেছনের ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। ১৮৫৭ সালের এই দিনে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে একটি সূচ কারখানার মহিলা শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। ওই সময় ১২ ঘণ্টা কর্মদিবসের বিরুদ্ধে নারীরা আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ফলে তাদের ওপর নেমে আসে পুলিশি নির্যাতন। ১৮৬০ সালের একই দিনে ওই কারাখানার নারী শ্রমিকরা ‘মহিলা শ্রমিক ইউনিয়ন’ গঠন করেন। আর সাংগঠনিকভাবে আন্দোলন পরিচালনা করেন। এ আন্দোলনের ফলে ১৯০৮ সালের ৮ই মার্চ প্রায় ১৫ হাজার নারী শ্রমিক নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, ভালো বেতন এবং ভোটের অধিকার দাবি নিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে মিছিল বের করেন। অতঃপর ১৯১০ সালের ৮ মার্চ কোপেনহেগেন শহরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মানির নারী নেত্রী কারা জেটকিন এই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯১১ সালে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ১৯৮৫ সালে ৮ মার্চকে জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল প্রথমবার এ দিবস পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
বাংলাদেশে নারীর অবস্থান
এই তথ্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপ অনুযায়ী দেশের ৮৭ শতাংশ বিবাহিত নারী নিজ গৃহেই নির্যাতনের শিকার। ৬৫ শতাংশ স্বামীর মাধ্যমে শারীরিক নির্যাতন, ৩৬ শতাংশ যৌন নির্যাতন, ৮২ শতাংশ মানসিক এবং ৫৩ শতাংশ স্বামীর মাধ্যমে অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১১’ নামে এই জরিপটি পরিচালিত হয়েছিল। এরপরে এই নির্যাতন মাত্রা কমে যায়নি বরং বেড়েছে।
মহিলা এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন বিকেলে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও টক-শোর আয়োজনসহ বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারের মাধ্যমে দিবসটি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নারী দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আঁধার ভাঙ্গার বিশেষ আয়োজন ছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।