- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- তাঁদের বক্তব্য বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
তাঁদের বক্তব্য বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৬ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতা মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায় নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনা ব্যাহত হবে জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, বিচার বিভাগ নিয়ে তার ওই উক্তি অসাংবিধানিক, তাঁদের বক্তব্য বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আজ রবিবার নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার পথে এ বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি নন, একটি প্রতিষ্ঠান। প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করা মানে বিচারব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা। তাই প্রধান বিচারপতি ও বিচারালয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
জামায়াত নেতা মীর কাসেমের আপিল শুনানি পুনরায় শুরু করার যে দাবি খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তার এ বক্তব্য ন্যায়বিচার ব্যাহত করবে ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’
গতকাল শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক আলোচনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিল বিষয়ে তীব্র সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
খাদ্যমন্ত্রী এই মামলার পুনঃশুনানি দাবি করে তাতে প্রধান বিচারপতি এবং রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অংশ না নেওয়ার দাবি জানান।
এই বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বিচার বিভাগ নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তাঁদের এই বক্তব্য বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ধরনের বক্তব্য অসাংবিধানিক। আগামী ৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিলের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মীর কাসেমের মামলার বিচারকাজে তদন্ত সংস্থার ‘গাফিলতি’র কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’
প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের পর আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।’
এ প্রেক্ষিতে শনিবার (৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানি দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। জামায়াত-শিবিরের আন্তর্জাতিক লবিস্টরা যে সুরে কথা বলছে একই সুরে কথা বলছেন প্রধান বিচারপতি। তাদের অভিযোগগুলোর সত্যতা দিয়েছেন তিনি।
‘শুধু তা-ই নয় এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের গত ৫ বছরের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ ও হত্যা করা হয়েছে। আমি মনে করি প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন করে শুনানি হওয়া উচিত। উনাকে (এসকে সিনহা) বাদ দিয়ে মীর কাসেমের শুনানি পুনরায় শুরু করুন।’
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ৪৫ বছরে অনেক বিচারপতি এসেছে আর গেছে, কিন্তু কেউ তার মতো এত অতিবক্তব্য দেয়নি। তার অতিকথনে সুধী সমাজের মানুষেরা জিহ্বায় কামড় দিচ্ছেন। তাই তাকে অতিকথন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আর তা না হলে সরকারের নতুন করে বিকল্প চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে আমি মনে করছি।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ওই সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বিচার পরবর্তী তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের জন্য আইনের সংশোধন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলছি, এই রায় নিয়ে শঙ্কা এখন সংকটে পরিণত হয়েছে। তবে এ সংকট আমাদের সৃষ্ট নয়। সংকট সৃষ্টি করেছেন প্রধান বিচারপতি। এটাই আমাদের দুঃখ। রায়ের আগে প্রধান বিচারপতি যদি এমন কথা বলেন, তাহলে জাতি কোথায় যাবে?’
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।