যৌন হয়রানির অভিযোগ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৫ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক যৌন হয়রানির অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার এ বিষয়ে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছর ২১টি দেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে ৬৯ টা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন অভিযুক্ত সেনাদের কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, অভিযোগের এই ঢেউ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের বিষয়ে কাজ করছে।
শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বান কি মুন প্রথমবারের মতো অভিযুক্ত দেশগুলোর নাম প্রকাশ করলেন। অভিযুক্ত সেনাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে চাপ সৃষ্টি করতেই দেশগুলোর নাম প্রকাশ করা হলো।
এর আগেও শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নিপীড়নের অভিযোগ জাতিসংঘকে বিব্রত করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে পারেনি।
পরিসংখ্যনে ২০১৩ সালে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে ৬৬টি অভিযোগ ছিল। ২০১৪ সালে তা কমে ৫২ হয়েছিল, তবে ২০১৫ সালে অভিযোগের সংখ্যা আবার বেড়েছে। ওই বছর মোট ৬৯টি অভিযোগ উঠেছে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ৬৯টি যৌন হয়রানির ঘটনার মধ্যে ২২টি ঘটেছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে। আর বাকিগুলো কঙ্গোতে ঘটেছে।
২১টি দেশের সেনা এবং পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।সবচেয়ে বেশি ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ দেশের শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মরক্কো ও দক্ষিণ আফ্রিকার শান্তিরক্ষীরা। তাদের বিরুদ্ধে চারটি করে অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন, কঙ্গো, তানজানিয়া, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, বুরুন্ডি, গ্যাবন, নাইজার, নাইজেরিয়া ও টোগোর শান্তিরক্ষীরাই বেশি যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িয়েছেন। রুয়ান্ডা, ঘানা, মাদাগাস্কার আর সেনেগালের পুলিশের বিরুদ্ধেও আছে এমন অভিযোগ। এ ছাড়া কানাডা, জার্মানি, মলদোভা ও স্লোভাকিয়ার কয়েকজন শান্তিরক্ষীও সংকটাপন্ন দেশে শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন।
ওই প্রতিবেদনে আরো অভিযোগ করা হয়, এসব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নজরে পড়ার মতো ব্যবস্থা নেয়নি জাতিসংঘ। ২০১৫ সালে একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা হয়নি। শুধু হাইতিতে কানাডার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ৯ দিনের জন্য বরখাস্ত করা হয়।
কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য অবশ্য দেশগুলোকেই দায়ী মনে করছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, শান্তি মিশনে কর্মরত শান্তিরক্ষীরা কোনো অন্যায় করলে তাদের দেশকেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।