- হোম
- >
- মুক্তিযুদ্ধ
- >
- পিরোজপুরের অস্ত্রাগার দখল করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা
স্বাধীনতা ঘোষণার ১৮ ঘন্টার মধ্যে
পিরোজপুরের অস্ত্রাগার দখল করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৩ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
একাত্তরের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার ১৮ ঘন্টার মধ্যে পিরোজপুরের মুক্তিকামী মানুষ মহাকুমা অস্ত্রাগার দখল করে ৮০টি রাইফেল ও চার সহস্রাধিক রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সে সময়ের জাতীয় পরিষদের সদস্য মহাকুমা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনায়েত হোসেন খানের নেতৃত্বে মহাকুমা অস্ত্রাগার দখল করে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়।
২৬ মার্চ দুপুরে পিরোজপুর শহরের টাউন ক্লাব ময়দানে মহাকুমা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ছাত্র, যুবকসহ হাজার হাজার মানুষের বিদ্রোহী চেতনায় উজ্জীবিত এক জনসভায় মহাকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনায়েত হোসেন খান তার জ্বালাময়ী ভাষণে বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের পুলিশ বাহিনী ও বাঙালি সৈনিকেরা পাঞ্জাবীদের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে এক অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তিনি বেঁচে আছেন কিনা আমরা কেউ জানি না।
একথা বলার সাথে সাথে হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা গগনবিদারী অস্ত্র চাই -অস্ত্র চাই-বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই-বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই শ্লোগানে সমগ্র এলাকা প্রকম্পিত করে তোলে। এ সময় এনায়েত হোসেন খানের নেতৃত্বে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ডাঃ আব্দুল হাই ও ডাঃ ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল এবং ছাত্র জনতা মহাকুমা প্রশাসকের অফিস সংলগ্ন মহাকুমা অস্ত্রাগার দখল করে অস্ত্র লুট করে।
অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা মহাকুমা প্রশাসনের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফ মিজানুর রহমান অস্ত্রাগার দখলে নেতৃবৃন্দকে সহাযোগিতা করেন আর এ কারণে তাকে পাক হানাদার বাহিনী ৩২ পাঞ্জাবের কর্নেল আতিকের নির্দেশে বেয়নেট দিয়ে ৫ মে বলেশ্বর নদের বধ্য ভূমিতে নিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে পৈশাচিক ভাবে হত্যা করে। ওই বছরের ১৯ মে দারোগা গোলাম মওলা ৫৫ জনের নাম এবং অজ্ঞাত ১০ হাজার লোকের বিরুদ্ধে পিরোজপুর থানায় অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মামলা দায়ের করে।
সুন্দরবন সাব-সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, মুলত সুন্দরবন ঘাটির সূচনা হয়েছিল লুট করা এই অস্ত্রাগারের অস্ত্র নিয়ে। মামলার আসামীদের অধিকাংশই আজ আর বেঁচে নেই।
এই মামলার ২৪ নং ক্রমিকের আসামী মুক্তিযোদ্ধা সমির দাস বাচ্চু বলেন, দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্যি যে, বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে এই মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরওয়ানা জারি করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, এই অস্ত্রাগার দখল করে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার গৌরব আজও অনুভব করি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।