১৯৭১ সালে এসএমজি হাতে রনাঙ্গনের অকুতোভয় লড়াকু বীর মুক্তিযোদ্ধার আব্দুল মালেক আজ বিনা চিকিৎসায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। 

রাষ্ট্রীয়ভাবে আব্দুল মালেককে মুক্তিযোদ্ধা মর্যাদা দিলেও খবর নেওয়ার মতো কেউ নেই। মুমূর্ষ অচেতন অবস্থায় বিছানায় পরে থাকলেও পরিবার পক্ষে তাকে ডাক্তার দেখাবার মত সামর্থ্য নেই। রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সরোজমিনে নাগেশ্বরী উপজেলার ৯নং ভিতরবন্দ ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় তিনি অচেতন অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন। 

তার স্ত্রী হামিজন বেগম জানান, ২০১২ সালে তার স্বামী প্রথম ষ্টোক করেন। ওই সময় তাকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে প্রাইম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার বলেছিলেন তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত তার দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা দরকার। কিন্তু ১৫ দিন চিকিৎসার পর অর্থের অভাবে তাকে বাড়ীতে নিয়ে আসি। পরে বাড়ীতে স্থানীয় ডাক্তার ও কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা চলছিল। গত ৮ ফেব্রয়ারি তিনি আবার ষ্টোক করেন। টাকার অভাবে এবারও হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি নি। তিনদিন থেকে তার কথা বন্ধ। চিকিৎসা করাব টাকা নাই। একটা স্যালাই দিবো সেই টাকাও জোগাড় করতে পারি নি। 

হামিজন বেগম আরও বলেন, প্রতিমাসে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ৮ হাজার টাকা পাই। তাই দিয়ে অতি কষ্টে সংসার চালাই। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর মালেকের ২ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে শফিকুল ইসলাম বিএসএস পাশ করে বেকার। ইয়াসমীন আক্তার নবম শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে ইয়াছিন ইসলাম ৫ম শ্রেণিতে পড়েন। 

ভিতরবন্দ মুক্তযোদ্ধা ইউনিয়ন কমান্ডার নাজিমুদ্দিন বলেন, আমরা এক সঙ্গে তিস্তামুখঘাট, ভরতখালী, নিলফামারী এলাকায় আব্দুল মালেকসহ জীবন বাজি রেখে মুখোমুখি যুদ্ধ করেছিলাম। আব্দুল মালেক খুবই গরীব। প্রথমবার ষ্টোকের সময় উপজেলা মুক্তযোদ্ধা কমান্ড থেকে এক হাজার টাকা সাহায্য করেছিলাম। এবারও উপজেলা কমান্ডকে জানিয়েছি। দেখি কি করে। 

উপজেলা ডিপুটি কমান্ডার নান্টু মিয়া বলেন, মালেকের অসুস্থতার কথা শুনেছি, আমাদের কি করার আছে ‘আল্লাহ ভরসা’।