শিবগঞ্জে পাগলা নদীতে পানি বৃদ্ধি : অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ
বর্ষা নেই, নেই উজান-ভাটার টান। তবু চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পাগলা নদীতে গত ১ সপ্তাহে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পার্শ্ববর্তী ইরি-বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় প্রায় ৩ হাজার বিঘা বোরো ধানের জমি। ইতিমধ্যেই তলিয়ে গেছে প্রায় হাজার বিঘে বোরো ধান ক্ষেত।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনে হঠাৎ নদীতে ২ ফুটেরও বেশী পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অসময়ে পাগলা নদীর পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় তীরে রোপন করা ইরি-বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরও এসময় একইভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল প্রায় ৩ হাজার বিঘা বোরো ধান। তবে নদীর দক্ষিণ দিকে পানির উচ্চতা ক্রমশ নিচের দিকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৪টি ঘাটে অবৈধ বাঁধ দেওয়ায় ঘটানাটি ঘটেছে। পাগলা নদী ও মহানন্দা নদীর মাঝখানে বহলাবাড়ি ঘাট, ফকিরপাড়া ঘাট, মহদীপুর ঘাট ও তর্তিপুর ঘাটে একসাথে চারটি অবৈধ বাঁধ দেওয়ায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে এই এলাকার ধানের জমি। ইতিপূর্বে নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০ বিঘা জমির বোরো ধান। পানির অবাধ প্রবাহের জন্য অবৈধভাবে নদীতে নির্মিত বাঁধ উচ্ছেদে কাজ করছে কৃষি অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোডের্র সাব-ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সাত্তার জানান, শুস্ক মৌসুমের এই সময়টাতে পাগলার অদূরে ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে বাংলাদেশে পানি সরবরাহের কথা রয়েছে। সেই হিসাবে পানি ছেড়ে দেওয়ায় পদ্মা ও পাগলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নদীর পার্শ্ববর্তী জমিতে রোপনকৃত ইরি-বোরো ধান ক্ষেতে কিছু ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ছেড়ে দেওয়া পানির অবাধ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ধান খেতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বোরো ধানচাষী দুরুল ইসলাম, আমির আলী, সোবহান হোসেন ও মোশারফ হোসেন মোসা জানান, বহলাবাড়ি ঘাট, ফকিরপাড়া ঘাট, মহদীপুর ঘাট ও তর্তিপুর ঘাটে একযোগে বাঁধ দেওয়ার ফলে তর্তিপুর ঘাট থেকে শাহাবাজপুর ইউনিয়নের শেষ মাথা পর্যন্ত নদীর ধারে যে সব ধানের জমি আছে ওই সব জমি পানিতে প্রায় প্লাবিত হয়ে গেছে। এর আগে গত বছরও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। ওই সব ঘাট ইজারাদাররা অধৈবভাবে নদীতে বাঁধ দিয়ে ভরাট করে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনুজ্জামান জানান, পাগলা নদীর উভয় তীরে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। অধিক পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকলে বা বন্ধ হলে ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নদীর পানির স্বাভাবিক ও অবাধ প্রবাহের জন্য নদীর ৪টা ঘাটে যে সব অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।