- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- চরাঞ্চলে মরিচ চাষ করে কপাল খুলেছে কৃষকের
চরাঞ্চলে মরিচ চাষ করে কপাল খুলেছে কৃষকের
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলে এবার ৭০০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচ চাষ করা হয়েছে। মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার। ওই কাঁচা মরিচ বিক্রির টাকায় চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। পরিপক্ক মরিচ জমিতে থাকতেই অনেক কৃষক আগাম বিঘা প্রতি মরিচের ক্ষেত ৬০ থেকে ৭০ হাজার বিক্রি করে দিচ্ছেন। সেই বিক্রিত টাকায় ওই কৃষকরা ভুট্টা ও ইরি ধান আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। অনেকে মরিচ চাষ করে লাখপতি বনে গেছেন।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চল ইউনিয়ন ফজলুপুরের খাটিয়ামারি গ্রামের মরিচচাষি গোলজার হোসেন এ বছর ২ বিঘা জমিতে বিদেশী জাতের মরিচ গাছ লাগিয়েছেন।
গোলজার হোসেন জানান, তার ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই সাড়ে ২ বিঘা জমি থেকে কাঁচা মরিচ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ। বর্তমান বাজারে কাঁচা মরিচের মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭০০ শত টাকা দরে। সে হিসেবে দাম হচ্ছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। আবার ওই মরিচেই যদি শুকানো যায় তাহলে ২৫ থেকে ৩২ মন শুট মরিচ হবে। পুরনো শুকনো মরিচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী দাম হচ্ছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। তবে কাঁচা মরিচ শুকনো করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। তাই অনেক কৃষক কাঁচা মরিচেই বিক্রি করে দিচ্ছেন আর ওই টাকা দিয়ে ভুট্টা ও ইরি ধানের আবাদ করতে পাচ্ছেন।
এদিকে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, জামালপুর, ঢাকা থেকে বিভিন্ন কোম্পানি ও মরিচের ব্যাপারীরা চরাঞ্চলে এসে মরিচের ক্ষেত দেখেন। যেসব মরিচচাষি মরিচের ক্ষেত বিক্রি করতে ইচ্ছুক তাদের আবাদকৃত প্রতি বিঘা জমি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় আগাম কিনে নিচ্ছেন। কিছু দিন পর তাদের লোকজন এসে ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে নিয়ে যাবে। শুধু গোলজার হোসেন নয়, তার মত একই গ্রামের আরও শতাধিক কৃষক এবার মরিচ চাষ করেছেন।
গাইবান্ধার সবচেয়ে বড় মরিচের হাট ফুলছড়ি। এই হাটটি নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রচুর মরিচের আমদানী হয়। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এ হাটে কাঁচা মরিচ কিনতে আসেন নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, রংপুর, জয়পুরহাট থেকে মরিচের ব্যাপারীরা। কারণ হিসেবে তারা জানান, ফুলছড়ির চরাঞ্চলের মরিচগুলোর ঝাল বেশি। প্রতি হাটে প্রায় ১২০ থেকে ১৩০ মণ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন হাটের ইজাদার। সে হিসেবে প্রতি হাটে শুধু মরিচেই বিক্রি হচ্ছে ৫ লাখ টাকার মত।
গজারিয়া ইউনিয়নের গলনাচর গ্রামের জয়নাল আবেদীন জানান, সার কম ব্যবহার হবে অথচ লাভজনক এমন ফসল হিসেবে চাষিরা মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিনি নিজেও এবার ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন।
এ ব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহাজুল ইসলাম বলেন, লক্ষমাত্রা ছিল ৬০০ শত ৬৪ হেক্টর কিন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চলতি মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলায় ৭০০ শত হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করেছে কৃষকরা। মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।