২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারেও বিশৃঙ্খল বিএনপি নেতাকর্মীরা
একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হাতাহাতি, মারধর করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
নিয়ম ভেঙেছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সিনিয়র নেতারা বাদ রাখেননি দৌড়াদৌড়ি, ঠেলাঠেলি। জুতা পরে অবাধ বিচরণের পাশাপাশি জুতা হাতে নিয়ে ছোড়াছুড়ি করতেও দেখা গেছে নেতাকর্মীদের।
শনিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ কয়েকজন তাকে এগিয়ে আনতে গেলে তাদের ধাক্কা নিয়েই শহীদ মিনারের দিকে এগোতে থাকেন তারা। খালেদার ফুল দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রেখেছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু সেই স্থানে ফুল না দিয়ে মূল বেদিতে ওঠার চেষ্টা করেন খালেদাসহ দলের নেতাকর্মীরা।
নিয়ম ভেঙে মূল বেদিতে ওঠার সময় ব্যারিকেড দেন সেখানে দায়িত্বে থাকা বিএনসিসি ও স্কাউট সদস্যরা। এতে তাদের উপর চড়াও হয়ে ছাত্রদল ও চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা মারধর করেন, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে আহত হন রাব্বি, রিয়াজ, জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন স্কাউট সদস্য।
এসময় শহীদ বেদিতে ঘুরতে থাকেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ। মওদুদকে পেয়ে স্কাউটের ছেলেরা বলতে থাকেন, ‘স্যার (মওদুদ) আপনি সিনিয়র নেতা। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) আপনার কথা শুনবেন। আপনার কথা সবাই শুনবেন। আপনি দ্রুত ম্যাডামসহ নেতাদের নিয়ে মূল বেদি ছাড়ুন।’
পরে বেদি ছাড়া দূরে থাক, দলের কাণ্ডারির দেখানো পথে হেঁটেছেন দলের অন্য নেতাকর্মীরাও। খালি পায়ে পা রাখার রেওয়াজ থাকলেও শহীদদের প্রতি এক প্রকার অসম্মান দেখিয়ে শহীদ বেদিতে জুতা নিয়েই ওঠেন তারা। এভাবে ক্রমে বাড়তে থাকে বিশৃঙ্খলা। সেখানে বাদ যাননি দলের সিনিয়র নেতারাও।
একদিকে যখন বেদি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনও নেতাকর্মীদের বেদি থেকে নামাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্কাউট, বিএনসিসি সদস্যরা গলদঘর্ম, তখন শহীদ মিনারের ডান পাশ দিয়ে বিশৃঙ্খলভাবে হঠাৎ করে দৌড়ে প্রবেশ করতে থাকেন বিএনপির কিছু নেতাকর্মী।
এসময় দৌড়াতে দেখা যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকেও। এর একটু পরেই দৌড়ে বেদির উপরে ওঠেন নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা খায়রুল আলম খোকন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার ব্যারিকেড তৈরি করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মাইকে ঘোষণা আসে, আপনারা শান্তভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করুন।
কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা কর্ণপাত করেননি কারও কথা। এরইমধ্যে চলতে থাকে হাতাহাতি, মারামারি। তখনও মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক নিয়ে খালেদা জিয়া।
পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জোরালো হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
শহীদ মিনারে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলায় দায়িত্বরত রোভার স্কাউটের সিনিয়র রোভার মেট জোনায়েদ আলম হৃদয় বলেন, ব্যারিকেট দেওয়ার কারণে আমাদের মার খেতে হয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।