- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- চুয়াডাঙ্গায় বিচারক সংকটে মামলাজট
চুয়াডাঙ্গায় বিচারক সংকটে মামলাজট
বিচারক সংকট আর পাহাড়সম মামলাজটের মধ্যে দিয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার বিচার কার্যক্রম। প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ বিচার প্রত্যাশিদের। প্রায় দীর্ঘ ১৭ বছর দামুড়হুদা সহকারি জজ আদালতে কোনো বিচারক নেই। সাড়ে ২৪ হাজার মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ৭ জন বিচারক। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং বিশেষ ট্রাইবুনালের আটটি আদালতে বিচারক বরাদ্ধ না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বিচারকরা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজের অধিনে ৯টি ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি অধীনে ৫টি আদালতে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। ১৪ বিচারকের মধ্যে অর্ধেক বিচারকের পদই শূণ্য। আবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং বিশেষ ট্রাইবুনালের আটটি আদালতে পাঁচ বিচারক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। সিনিয়র সহকারি জজ তিনজন ও সহকারি জজের একটি পদ শূণ্য। চারটি পদে বিচারক না থাকায় চুয়াডাঙ্গা সদর, জীবননগর, দামুড়হুদা ও আলমডাঙ্গার আদালতে দেওয়ানী ও পারিবারিক মামলার বিচার কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। জেলা ও দায়রা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম ও ২য়, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ ১ম ও ২য় আদালতে বিচারক দায়িত্বে আছেন।
পাঁচ জন বিচারককে নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের পরেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং বিশেষ ট্রাইবুনালের আটটি ও সিনিয়র সহকারি ও সহকারি চারটি জজ আদালতেও দায়িত্ব পালন করতে হয়। পাঁচ জন বিচারককে সাড়ে ১৬ হাজার মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একজন ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ জনের পদ শূণ্য রয়েছে। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। দুই জন বিচারককে প্রায় ৮ হাজার মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। বিচারকরা তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। একজন শিক্ষানবিশ সহকারী জজ আছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ৬৭৮টি মামলা বিচারাধীন থাকলেও এ আদালতের জন্য কোন বিচারক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ২০০০ সালে অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হওয়ায় দামুড়হুদা আদালতের সহকারী জজ সন্তোষ কুমার শাহাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। সেই থেকেই দীর্ঘ ১৭ বছর এ আদালতে বিচারক শূণ্য রয়েছে। ফলে বিচার প্রার্থী সাধারণ মানুষকে বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আর মামলার দিন পড়ছে ৩-৪ মাস পরে। অল্প সংখ্যাক মামলার বিচার কাজ শেষ হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধান করবে।
দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বৃদ্ধ হেকমত আলি জানান, ১১ বছর জমির মামলা নিয়ে কোর্টে ঘুরছি। এখনও মামলার বিচার শেষ হয়নি। আর কবে শেষ হবে তাও বলতে পারবো না।
আইনজীবী সহকারি কামাল হোসেন জানান, বিচারক (স্যার) কম থাকায় মামলার স্বাক্ষী হয়না। তাই মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। অনেকে মামলার খোঁজ খবর রাখেন না।
চুয়াডাঙ্গা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এমএম শাহাজাহান মুকুল জানান, চুয়াডাঙ্গা আদালতে বিচারক সংকটের কারণে মামলার জট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা জজ কোটের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট মহঃ শামশুজ্জোহা জানান, বিচারক সংকটের জন্য দ্রুত বিচার ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা আদালতে একজন বিচারককে ৪টি আদালতে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এখানে দ্রুত বিচারক নিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া হলে মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে। মানুষ দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার পাবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।