- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- অনাবাদি জমিতে গম ও ভুট্টা চাষ করে দিশেহারা কৃষক
অনাবাদি জমিতে গম ও ভুট্টা চাষ করে দিশেহারা কৃষক
ছাতকে মৌসুম ছাড়া ধান উৎপাদন করে চমক সৃষ্টিকারি সেই কৃষক মতিউর রহমান ছাদিক এখন অনাবাদি জমিতে গম ও ভুট্টা চাষাবাদ করে চরম বিপাকে পড়েছেন।
‘মৌসুম ছাড়া ধান উৎপাদনে কৃষক ছাদিকের চমক’ শিরোনামে সংবাদটি ২৪ জানুয়ারি দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রকাশিত সংবাদটি সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের নজরে আসলেও কৃষি ও এ কৃষককে বাঁচাতে কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি।
ছাদিক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বদিরগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল হাই’র পুত্র। সার ও কীটনাশকের অভাবে নষ্টের পথে চাষকৃত প্রকল্পের ১৩ বিঘা জমির গম ও ২ বিঘা জমির ভুট্ট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করলেও কোন সহযোগিতা করা হয় নি। ফলে এ প্রকল্পটি চরম ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
সরজমিন ঘুরে জানা যায়, কৃষক ছাদিক পরিক্ষামূলকভাবে অনাবাদি ৪০ বিঘা জমিতে মৌসুম ছাড়া ধান উৎপাদন করে সিলেট বিভাগসহ দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তার উৎপাদিত ক্ষেতের ধান একনজর দেখতে প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে কৃষকরা আসতেন। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে পাকা ধান কর্তনে ব্যঘাত দেখা দিলে স্থানীয় কৃষি অফিসের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও ধান কর্তনের মেশিন রহস্যজনক কারণে তাকে প্রদান করা হয় নি। সময়মতো উৎপাদিত পাকা ধান কর্তন করতে না পারায় এ জমিতে বোর মৌসুমের চাষাবাদে বিলম্ব হচ্ছে। এতে বোর মৌসুমে ব্রিডার বীজ থেকে উৎপাদিত চারা রোপন করে ভিত্তি বীজ উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আলোচিত এ প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ গুরুত্বের সাথে আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মৌসুম ছাড়া অসময়ে ধান উৎপাদন ও অনাবাদি জমিতে চাষাবাদের প্রজেক্টটিতে ২১ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান প্রজেক্টটি সরজমিন ঘুরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কৃষক ছাদিকের দাবি অনুযায়ি সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের জন্য মৌখিক ভাবে উপস্থিত কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দারকে নির্দেশ দিয়ে গেলে আজও বাস্তবায়িত হয় নি।
সিলেট অঞ্চলের শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বদিরগাঁওয়ে ২ বিঘা অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষ ও পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১৩ বিঘা অনাবাদি জমিতে গম চাষ করা হয়। গম চাষের ২ মাস পর পোকার আক্রমণে গম গাছের পাতা লালছে হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। পোকার আক্রমণের পর উপজেলা উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করেন কৃষক ছাদিক। একপর্যায়ে তিনি সরজমিন পরিদর্শন করে কৃষককে কোন পরামর্শ না দিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য বলে যান। কৃষি বিভাগের আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে ভুট্টা বীজ বফন করা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সঠিক ভাবে বীজ বফন হয় নি। পরবর্তীতে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ি শ্রমিক দিয়ে আবারো বীজ বফন করানো হয়। সার ও সঠিক পরামর্শের অভাবে ভুট্টা চাষ প্রকল্পটিও আলোর মুখ দেখার সম্ভাবনা কম। শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ভুট্টা চাষের জমিতে কৃষি বিভাগের দেওয়া সাইনবোর্ডে সোয়ান-২ জাতের নাম উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এ জাতের কোন বীজ রোপন করা হয় নি দাবি কৃষক ছাদিকের।
কৃষক মতিউর রহমান ছাদিক জানান, পরিক্ষামূলক ভাবে তিনি মৌসুম ছাড়া ধান উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু ধান পাকার পর শ্রমিক সঙ্কটের কারণে যথা সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয় নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ থাকার পরও রহস্যজনক কারণে ধান কর্তনের যন্ত্র দেওয়া হয়নি। গম ও ভুট্রা সময়মতো চাষ করলেও সার ও কীটনাশকের অভাবে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পোকার আক্রমণের সংবাদ কৃষি অফিসের দায়িত্বরত উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুল হামিদকে বার বার অবহিত করার পরও তিনি কোন সু-পরামর্শ প্রদান করেননি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।