ছাত্রীদের দিয়ে শিক্ষিকার মাথার উকুন নিধন
বিদ্যালয়ে পড়ানো বাদ দিয়ে ছাত্রীদের দিয়ে শিক্ষিকারা নিজেদের মাথার উকুন নিধন করছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুলের টয়লেট থেকে শুরু করে ভাতের নোংরা প্লেট পরিস্কারসহ বিদ্যালয় ঝাড়ু দেওয়ার কাজও করানো হয়। আর এসব কাজ না করলে নেমে আসে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন।
শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসব কাজ করানোর ফলে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অভিভাবক আর এলাকাবাসী। তারা অভিযুক্ত শিক্ষিকাদের অপসারণ ও বিচার দাবিতে ক্লাসরুম ও অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার শিমুলিয়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হচ্ছেন- প্রধান শিক্ষিকা ফুয়ারা আবেদিন, সহকারী শিক্ষিকা রেহেনা বেগম ও নাজমা বেগম। তাদের অপসারণ ও বিচার দাবি করেছেন অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক রবিউল ইসলাম ও শাহাদৎ হোসেন অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষিকা ফুয়ারা আবেদিন, সহকারী শিক্ষিকা রেহেনা বেগম ও নাজমা বেগম কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেট পরিস্কার করান। এ ছাড়া ওই শিক্ষকদের দুপুরের খাওয়ার পরে প্লেট পরিস্কার ও অফিস কক্ষ ঝাড়ু দিতে হয় শিক্ষার্থীদের।
অভিভাবক রবিউল ইসলাম ও শাহাদৎ হোসেন আরো অভিযোগ করেন, শুধু এসব কাজই নয়, ওই তিন শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের দিয়ে তাদের মাথার উকুনও তুলে নেন। শিক্ষার্থীরা তাদের আদেশ না মানলে কিংবা টয়লেট, প্লেট পরিস্কার ও মাথার উকুন তুলে না দিলে তাদের উপর নির্যাতনও চালানো হয়।
আরেক অভিভাবক মমিন মিয়া জানান, শিক্ষকদের কথা মতো তাদের কাজ না করে দিলে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়। এমনকি সম্প্রতি কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করছেন।
শিক্ষার্থী মুছা মিয়া ও জাহিদ হাসান জানায়, প্রায়ই স্কুলের টয়লেট পরিস্কার করতে হয়। এছাড়া তিন ম্যাডামের দুপুরের খাবার পর প্লেট পরিস্কার করতে হয়।
আরেক ছাত্রী জাহাজাদি আকতার বলেন, ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের দিয়ে ম্যাডামরা তাদের মাথার উকুন তুলে নেন। কিন্তু তাতে রাজি না হলে ম্যাডামরা আমাদের মারপিট করেন।
এদিকে, বিদ্যালয় চত্বরে বুধবার দুপুরে ক্লাস্টারের আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল। তবে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর চাপের মুখে তা করতে পারেন নি। ওই সময়ে পলাশবাড়ী উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এটিএম জাকির হোসেন ও পলাশবাড়ী উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ইনস্ট্রাক্টর সোহেল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সেখানে সরেজমিনে যান। সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ইনস্ট্রাক্টর সোহেল মিয়া অসাদচরণ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফুয়ারা আবেদিনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি রাজি হন নি। এসময় অন্য শিক্ষকরাও সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেন নি।
পলাশবাড়ী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জাকির হোসেন জানান, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।