নড়াইলের গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বনাশা ইয়াবা
নড়াইলের পৌরশহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে নীতি-নৈতিকতাবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং অসামাজিক কার্যকলাপ দিনে দিনে বাড়ছে। ভয়াল মাদকের আগ্রাসী থাবায় সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাময়ী নড়াইল প্রায় বিপন্ন জনপদে পরিণত হয়ে পড়েছে।
হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সর্বনাশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে এখানে মাদক বিক্রেতার পাশাপাশি বাড়ছে মাদক সেবনকারীর সংখ্যাও। এখানকার মাদক সেবনকারীদের কাছে বিশেষ করে ইয়াবা ট্যাবলেট এখন হট কেকের মতো।
নড়াইল পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলামের মাদকবিরোধী অভিযান ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কর্মকর্তারা মাদক পাচার ও বিক্রি বন্ধে তৎপর থাকলেও থেমে নেই মাদক বেচাকেনা। মাদকের সহজলভ্যতা, অপেক্ষাকৃত কম দাম এবং পুলিশি ঝুঁকি কম থাকায় নড়াইল পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকায় মাদক পাচারকারী ও সেবনকারীরা ইয়াবা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, পৌরসভাসহ সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাণিজ্যিক পয়েন্টে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। এসব মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিল, হেরোইন, মদ ও ঘুমের বড়ি।
নড়াইলের সড়ক পথ ও নৌপথ দিয়ে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করে থাকে। সীমান্ত শহর যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের মাদক পাচারকারী চক্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিজস্ব লোকজন দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক পাচারের তারা পুরুষদের চেয়ে নারীদের বেশি ব্যবহার করছে। এসব নারীদের অধিকাংশই স্বামী পরিত্যক্ত ও তালাক প্রাপ্ত। এদের মধ্যে আছে কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
স্থানীয় থানা পুলিশ মাঝে মধ্যে মাদকসহ সেবনকারীদের আটক করলেও মুল পাচারকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তাই কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না মাদক বেচাকেনা। বিশেষ করে সর্বনাশা ইয়াবার ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে এখানকার সচেতন অভিভাবক মহল তাদের সন্তানদের নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে নড়াইলের কিছু শিক্ষার্থী ও যুকবদের সঙ্গে কথা বলে ইয়াবা বিক্রির সত্যতা নিশ্চিত করা গেছে।
জানা যায়, গত ছয় মাসে শত শত শিক্ষার্থী ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। নষ্ট হচ্ছে একটি জাতির মূল চালিকাশক্তি।
ইয়াবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ডাঃ মোহিত কামাল বলেন, নিয়মিত ইয়াবা সেবনে রক্তচাপ বৃদ্ধি, হার্ট অ্যাটাক, ঘুমের ব্যাঘাত, অস্বস্তিকর মানসিক অবস্থা, কিডনি বিকল, চিরস্থায়ী যৌন অক্ষমতা, ফুসফুসের প্রদাহসহ ফুসফুসে টিউমার ও ক্যান্সার হতে পারে।
নড়াইল জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, শুধুমাত্র পুলিশের পক্ষে মাদক বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। মাদকদ্রব্য উদ্ধারে জনসচেতনতা না বাড়ালে মাদকের ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে মাদক বেচাকেনা বন্ধে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।