এমএসএন নামে পরিচিত বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড-ত্রয় লিওলেন মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার এমনি এমনি আর বিশ্বসেরা নন। দলের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, সতীর্থদের প্রতি ভালবাসা ও সম্মান যে তাদের এই পর্যায় নিয়ে এসেছে তা আরও একবার প্রমাণ হলো। 

রবিবার নিজেদের ঘরের মাঠে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ৬-১ গোলে জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। খেলার ৮১ মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। আর পেনাল্টি থেকে গোল করার দায়িত্বটি মেসিকেই দেওয়া হয়। তবে এখানে এসেই মেসি একটি অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি বলটি সরাসরি জালে না পাঠিয়ে আলতো করে পা লাগালেন। আর পিছন থেকে তার সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ দৌড়ে এসে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে কিক করেন। এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বার্সার ফুটবলাররাও। সবাই অনেকটা হতবিহ্বল হয়ে গিয়েছিল। তবে মেসি ছিলেন একদম স্বাভাবিক। আর ঠোঁটে ঝুলে ছিল তার স্বভাবসুলভ দুষ্টু হাসি।

এই গোলটি যদি মেসি নিজে করতেন তবে তিনি লা লিগায় ৩০০ গোলের মালিকের খাতায় নাম তুলতে পারতেন। তবে মেসির অপূর্ণতা থাকলেও সুয়ারেজ ঠিকই হ্যাটট্রিকে স্বাদ পেয়েছেন। আর এবারের লিগে গোলদাতার তালিকায় ২৩টি গোল নিয়ে শীর্ষে উঠেছেন। আর তার থেকে দুই গোল কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

এ বিষয়ে নেইমার জানিয়েছেন এমন পেনাল্টির জন্য তারা নাকি অনুশীলনও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মেসি আসলে আমার জন্যই বলটি পাস করতে চেয়েছিল। তবে লুইস কাছে থাকায় ওই গোলটি করেছে। কে গোল করল সেটা ব্যাপার নয়। পরিকল্পনা কাজে লেগেছে এটাই বড় কথা।’

মেসি-সুয়ারেজের এই পেনাল্টি শতাব্দির সেরা পেনাল্টির তকমাও পেয়ে গিয়েছে এরই মধ্যে। ‘পেনাল্টি অব দ্য সেঞ্চুরি’ বলা হচ্ছে এটাকে। বার্সা তারকার এমন সিদ্ধান্তকে অখেলোয়াড় সুলভ আচরণ এবং অসম্মানজনকও বলেছেন অনেকে। তবে সেল্টা ভিগোর কোচ সমর্থন জানিয়েছেন মেসিকে।

সেল্টা ভিগোর কোচ এডওয়ার্দো বেরিজ্জো বলেছেন, ‘মেসির পেনাল্টিটি একটু অন্যরকম এবং ভিন্ন পথে হয়েছে। এর বেশি কিছু না। তবে এটা অসম্মানজনক ছিল না।’

তবে মেসি যে একাই এমন অদ্ভুত কাণ্ড করেছেন তা নয়। মেসির আগেই আরেক কিংবদন্তি ফুটবলার যোহান ক্রুয়েফ এই কাজ করে আলোচিত হয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে আয়াক্সের হয়ে হেলমন্ড স্পোর্টের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি। অবশ্য মেসি কাণ্ডের সঙ্গে ওই পেনাল্টির কিছুটা পার্থক্যও রয়েছে। ক্রুয়েফ তার সতীর্থ জেলপার ওয়েলসের দিকে বল বাড়িয়ে দিলে তিনি বলটি ফের ক্রুয়েফের কাছে পাঠিয়ে দেন। ওয়ান টু ওয়ান পাসে পাওয়া বল জালে জড়িয়ে গোলরক্ষককে বোকা বানান ক্রুয়েফ। মেসি সেই ঘটনার কথাই যেন নতুন করে মনে করিয়ে দিলেন।