ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন জেলার সাদু্ল্যাপুর উপজেলার পূর্ব খামার বশলিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের মেয়ে সাথি আকতার (১৮)। হাতে মেহেদীর রং না শুকাতেই শাশুড়ি ও জায়ের হাতে এসিডে দগ্ধ হতে হল তাকে। এতে তার কোমরের নিচে ঝলসে গেছে।

সদর উপজেলার বানিয়ারজান কালিবাড়ি এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে সাথি সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডের ৭নং বেড়ে চিকিৎসাধীন।

সোমবার রাতে সাথি জানান, সদর উপজেলার বানিয়ারজান কালিবাড়ি এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সৌরভ মিয়ার (২০) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সংসার বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে প্রেমিক সৌরভের হাত ধরে গত ৩০ জানুয়ারী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান চট্টগ্রামে। সেখানে তাদের রেজিস্ট্রিার মাধ্যমে বিয়ে হয়। বিয়ের বিষয়টি সৌরভের পরিবার জেনে যায়। পরে সৌরভের মা হালিমা বেগম কোনো সমস্যা হবে না বলে মোবাইলে তাদের বাড়ি ফিরে আসতে বলেন।

তিনি জানান, আশ্বাস পেয়ে তারা দু’জনে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর সৌরভের বড় ভাই হাবিবের স্ত্রী রেহেনার সঙ্গে তাকে থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সৌরভ ছিল না। দুই-তিন দিনেও সৌরভের সঙ্গে তার দেখা বা কথা হয়নি।

প্রেম করে বিয়ে করার অপরাধে শাশুড়ি হালিমা বেগম ও রেহেনা ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তাকে মারধর করতে থাকে। এ সময় তারা পেটে ও কোমরে লাথি দিলে রক্তপাত শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা বোতলে থাকা এসিড কোমরের নিচে ঢেলে দেয়। রাতভর তাকে ওই বাড়িতে আটকে রেখে পরদিন সকালে রিকশাভ্যানে করে নিজ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত সেবিকা রুমা বেগম জানান, এসিডে রুমার কোমরের নিচের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে।

সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হারুন অর রশিদ জানান, এসিড নিক্ষেপের সময় সাথির পরনে মোটা কাপড় থাকায় মারাত্বক কোনো ক্ষতি হয়নি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অল্প সময়ে তিনি সুস্থ হবেন।

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস জানান, এসিড নিক্ষেপের ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।