বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক শমশের আলম চৌধুরী মারা গেছেন।

বুধবার ভোররাত ৩টারদিকে চট্টগ্রামস্থ সার্জিস্কোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি চট্টগ্রামস্থ সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে মারা যান। 

শমশের আলম চৌধুরী ১৯২০ সালে উখিয়ার উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের মাতাব্বরপাড়ার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মরহুম হাকিম আলী চৌধুরী, মাতা-আমেনা খাতুন। রত্নাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার এমই স্কুল হতে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়ে তৎকালীন বৃটিশ আমলে কক্সবাজারস্থ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এনট্রান্স পাশ (বর্তমান এসএসসি) করেন তিনি। তখনকার সময়ে জেলায় আর কোন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্টান না থাকায় তিনি বেশিদুর এগোতে পারেননি।

বৃটিশ শাসনামলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি চৌকস সামরিক প্রশিক্ষক এবং সিগন্যালকোরে কর্মরত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি চাকুরী ছেড়ে দেন। পাকিস্তান সরকারের আমলে তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় তিনি রত্নাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাহচার্যে এসে তিনি ১৯৭১ সালে সক্রিয় ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। 

তাঁর যুদ্ধ পূর্ব ও পরবর্তী সময় কেটেছে দেশ ও মানবতার কল্যাণে। জেলার আওয়ামী রাজনীতির জন্য বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবিদ একটি ইতিহাস বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও শমশের আলম চৌধুরীর নিকটাত্মীয় রাসেল চৌধুরী।

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন, উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদি, কক্সবাজার সদর আসনের সাংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আ’লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সম্পাদক মুজিবুর রহমান, দৈনিক দৈনন্দিন প্রধান সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, উখিয়া উপজেলা আ’লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীসহ  রাজনৈতিক ও পেশাজীবি নানা সংগঠন।