সেপটিক ট্যাংক থেকে নবজাতক উদ্ধার
জন্মের পর একটি শিশুর আশ্রয় মায়ের কোল। পরম মমতায় মা তুলে নেন আপন কোলে। আবার কখনো সেই মা’ই হন নির্দয়। নারীছেড়া ধন শিশুকে ফেলে দেন কখনো নর্দমায়, কখনো ছুড়ে মারেন খোলা আকাশের নিচে, আবার কখনো সেই শিশুকে খাদ্য বানান শেয়াল-নেকড়ের।
এমন একটি নির্দয় ঘটনার স্বাক্ষী হল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের সাধারণ মানুষ।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ওই গ্রামের দিনমজুর সুনু মিয়ার বাড়ির টয়লেটের পরিত্যক্ত সেফটিক ট্যাঙ্কিতে (৩টি রিং দিয়ে বানানো) পাওয়া গেল একটি নবজাতক কন্যা। ধারণা করা হচ্ছে অবৈধ সম্পর্কের কারণে জন্ম নেয়া শিশুটিকে কোনো মা প্রসবের পর এখানে ফেলে দিয়েছেন।
তবে নবজাতকটি কার সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নির্দয় মা জন্ম দেয়ার পরপরই পলিথিনে মুড়ে সোমবার ভোর রাতের কোন একসময় সুনু মিয়ার বাড়ির টয়লেটের পানিতে ভরা ওই ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন জন্মদাত্রী মা। পানিতে ভরা ওই ট্যাঙ্কিতে শিশুটি ডুবে না গিয়ে ভেসে থাকে। করতে থাকে কান্না। বাড়ি থেকে একটু দুরে হওয়ায় কেউই শুনতে পাচ্ছিল না শিশুটির কান্না।
ভোরে সুনু মিয়া টয়লেটের কাছে যেতেই শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান। তার চিৎকারে জড়ো হন আশে পাশের লোকজন। উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। বের করা হয় পলিথিন থেকে। খবর পেয়ে ছুটে যান ইউপি সদস্য এম মামুনুন রশিদ। ট্যাঙ্কির পোঁকায় ধরা শিশুটিকে পরিস্কার করা হয়। তিনি যোগাযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখতের সঙ্গে। তার পরামর্শে পাঠানো হয় মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে।
কিন্তু নবজাতকটির কোন অভিভাবক না থাকায় ভর্তি করতে রাজি হয় না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইউপি সদস্য এম মামুনুর রশিদ যোগাযোগ করেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে। পরে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। এরই মাঝে শিশুটিকে দত্তক নিতে আসা কমলগঞ্জ উপজেলার রামপাশা গ্রামের নিহারুন বেগম শিশুটিকে দেখাশুনা করছেন।
হাসপাতালের সমাজসেবা বিভাগও এগিয়ে এসেছে শিশুটির জন্য। শিশুটিকে বঁচানো গেলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে নিতে চায় তাকে দেওয়া হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।