অভিনেত্রী ঈশানার বিরুদ্ধে প্রযোজকের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
লাক্স তারকাখ্যাত অভিনেত্রী মৌনতা খান ঈশানার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন প্রযোজক মারুফ খান। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে কোটি টাকার মানহানি এ মামলা (১৪১/১৬) দায়ের করা হয়।
‘অর্ণিমা ভিশন’ এর স্বত্বাধিকারী ও প্রযোজক মারুফ খান জানিয়েছেন, শুটিংয়ের শিডিউল ফাঁসানো ও প্রযোজকের অনুপস্থিতিতে শুটিং সেটে প্রযোজককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় এ মামলা করেছেন।
এই ‘অর্ণিমা ভিশন’ এর ব্যানারে কায়সার আহমেদের পরিচালনায় ‘সহযাত্রী’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করছিলেন ঈশানা।
প্রযোজক মারুফ খান জানান, ঈশানা গত ৭ জানুয়ারি উত্তরার নীলাঞ্জনা শুটিং স্পটে মেগা ধারাবাহিক ‘সহযাত্রী’ নাটকের শুটিং করছিলেন। একপর্যায়ে মেকআপ রুমে তাঁর সহ-শিল্পীসহ কয়েকজনের সামনে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা বলেন ঈশানা; যা ওখানে উপস্থিত একজন সহশিল্পী তাঁর মুঠোফোনে রেকর্ড করেন। রেকর্ডকৃত আলাপচারিতা শোনার পর তিনি শুটিং স্পটে উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে পুলিশ নিয়ে হাজির হন। এরপর পুলিশের একজন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে বিষয়টির সুরাহা হয়।
মারুফ খান বলেন, ‘পুলিশ ও সাক্ষীদের সামনে ঈশানা প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে রেকর্ডকৃত কথা শোনালে তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন। তখন সেটে অভিনেত্রী ডলি জহুর, প্রিয়া আমানসহ শুটিং-সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশসহ সবার সামনে বিষয়টি যখন সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে, তখন পুলিশ ঈশানাকে থানায় নিয়ে যেতে চান। অভিনয়শিল্পী ডলি জহুরের অনুরোধে আমি পুলিশকে থানায় না নেওয়ার অনুরোধ করলে পুলিশ চলে যান।’
এদিকে শুটিং শেষ করে বাসায় ফিরেই ঈশানা তাঁর ফেসবুক ওয়ালে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দেন। এতে প্রযোজক অসম্মানিত বোধ করেছেন বলেই জানান। এরপর প্রযোজক মারুফ খান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ঈশানার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঈশানা বলেন, ‘যখন থেকে আমি “সহযাত্রী” নাটকের শুটিং শুরু করেছি, তখন থেকেই এই প্রযোজক আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। সময়ে-অসময়ে, অকারণে কথা বলতে চান। আমাকে নিয়ে নাকি শপিংয়ে, রেস্টুরেন্টেও যেতে চান। বিষয়গুলো আমার মোটেও ভালো লাগেনি। খুব বিরক্ত ছিলাম। শুনেছি এই প্রযোজক আরেকজন অভিনয়শিল্পীকে বলেছিলেন, আমি তোমাকে আমার সব নাটকে নেব, কিন্তু তোমাকে তো আমার সঙ্গে প্রেম করতে হবে। প্রযোজকের প্রস্তাবে অসম্মত হওয়ায় মেয়েটিকে গালিগালাজ পর্যন্ত শুনতে হয়েছে! এটা নিয়েও আমি তাঁর ওপর খুব বিরক্ত ছিলাম। এ ব্যাপারে তিনি আমার ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। তিনি তো একটা পর্যায়ে আমাকে বলেই ফেলেছেন, তাঁর সঙ্গে আমাকে বন্ধুত্ব করতেই হবে। আর তা না হলে নাকি আমি আগাতে পারব না! তিনি এ-ও বলেন, আমি তো চাই তুমি আমার সঙ্গে কাজ করো। কিন্তু এভাবে থাকলে আমরা কাজ করব কীভাবে!’
ঈশানা বলেন, ‘প্রায়ই এভাবে নানা ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতেন তিনি। ফাইনালি আমি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। উল্টাপাল্টা কথা বলি। আমি তো কাজ করতে এসেছি। আর শুটিংয়ে আমার পরিচালক যেটা বলবেন সেটাই করব। একজন প্রযোজক কেন প্রতিদিন শুটিং সেটে এসে বসে থাকবেন। এ নিয়েও আমার অভিযোগ ছিল। এ বিষয়েও তিনি আমার ওপর বিরক্ত ছিলেন।’
একপর্যায়ে নাটকটিতে কাজ না করারই সিদ্ধান্ত নেন ঈশানা। আর বিষয়টি সহকারী পরিচালককে জানিয়েও দেন। এর মধ্যে প্রযোজকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের আরও অবনতি হতে থাকে। প্রযোজক এবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন বলেও জানিয়েছেন ঈশানা।
ঈশানা বলেন, ‘উনি যখন বলেন, আমি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করব। আমি তখন বললাম, আপনি আমার সঙ্গে যা করেছেন, আমিও সবাইকে জানিয়ে দেব। আপনার মুখোশ খুলে দেব। তখন প্রযোজক আমাকে বললেন, তুমি তো একটা মেয়ে, এসব তুমি বলতে পারবা না। তখন আমি বললাম, ঠিক আছে, দেখা যাক। কে কী বলতে পারে। আমি যখন একজন প্রযোজককে গালি দেব, তখন এর পেছনে যথেষ্ট কারণ আছে।’
প্রযোজক মারুফ খান বলেছেন, ‘আমাদের আলোচনার পুরো ব্যাপারটি কিন্তু ভিডিও করে রাখা হয়। তখন ঈশানা তাঁর ভুল স্বীকার করেন। এরপর এখন এ ধরনের কথা বলা ছাড়া তো তাঁর আর কোনো উপায় নাই। আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আদালতের মাধ্যমেই এর জবাব তিনি পাবেন।’
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।