সোনামসজিদ বন্দরে পাথর আমদানি স্থগিত
সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে ছোট পাথর (চিপস) আমদানি স্থগিত করেছে আমদানিকারকরা। আমদানি স্থগিত কর্মসূচি লম্বা হলে পদ্মা সেতু, রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বেসরকারি নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প বিঘ্নিত হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
৩১ জানুয়ারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ভারতীয় পাথর রপ্তানিকারকের অযৌক্তিক খরচের হিসাব, নিম্নমানের পাথর সরবরাহ ও হঠাৎ করে অযৌক্তিকভাবে পাথরের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা শনিবার থেকে বন্দর দিয়ে ছোট পাথর আমদানি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
আমদানিকারকরা জানান, ভারতীয় পাথর রপ্তানিকারকরা নিম্ন মানের ছোট পাথর সরবরাহ, সরবরাহে কৃত্রিম সংকট ও যানজটসহ নানা জটিলতা তৈরি করায় এবং অযৌক্তিকভাবে হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধি করায় বাংলাদেশি ছোট পাথর ব্যবসায়ীরা বিপুল ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন। এদেশে পাথরের ব্যপক চাহিদার কারণে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা এটিকে পুঁজি করে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে।
অন্যদিকে সোনামসজিদ বন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব জানিয়েছেন, বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছোট পাথর আমদানি স্থগিত থাকবে।
গত ৫ ডিসেম্বর ভারতের মহদীপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তার তিন দিন পর ৮ ডিসেম্বর আবারো বৈঠকে বসেন দেশী আমদানিকারকরা। বৈঠকে কয়েকটি সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়, যা চিঠি আকারে বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠানো হয়। শেষে ৩১ জানুয়ারি পাথর আমদানি বন্ধের কথা জানিয়ে ভারতের মহদীপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেয় সোনামসজিদ আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের পাথর বিষয়ক উপকমিটি। চিঠিতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন অযৌক্তিক খরচের হিসাব ছাড়াও পাথরের নিম্নমান ও দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানো হয়। চিঠিতে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়া হয়, রপ্তানিকারকদের কারণে আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং বিষয়টি সুরাহা না হলে শনিবার থেকে পাথর আমদানি স্থগিত করা হবে।
কিন্ত চিঠির সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পাথর আমদানিকারকদের জরুরী সভা হয়। সভায় ভারতের পক্ষ থেকে কোন রকম সহযোগীতা না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করা হয় এবং সকলের সম্মতিক্রমে শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে সকল সমস্যার সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত পাথর আমদানি থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন বলে জানান সোনামসজিদ আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু তালেব।
তবে বাংলাদেশী আমদানিকারকদের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শ্রী ভূপতি মন্ডল। তিনি বলেন, এসব আসলে কোনো সমস্যা না। মূল সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশী আমদানিকারকরা লোড গাড়ি নিতে পারছেন না। যে কারণে এ পারেও (মহদীপুরে) যানজটসহ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, চাহিদা থাকলে পণ্যের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগের সহকারী কমিশনার সাঈদ আহমেদ জানান, পাথরের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি দেশীয় আমদানিকারকরা লিখিতভাবে জানিয়েছেন। আমরা সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন এ সংকটের দ্রুত সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন দেশীয় সরবরাহকারী, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট সমিতির সাধারন সম্পাদক শফিউর রহমান জানান, পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে ৪ শতাধিক বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারতীয় গাড়ী বন্দরে ঢুকলেও শনিবার দিনশেষে ফল ও অন্যান্য পণ্যবাহী ১৪৭টি ভারতীয় গাড়ী ঢুকেছে বন্দরে। স্বাভাবিক অবস্থায় বন্দরে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক পাথরের গাড়ী ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশ করে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।