- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মামাতো ভাইসহ দুই জনের মৃত্যুদণ্ড
ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মামাতো ভাইসহ দুই জনের মৃত্যুদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৩য় শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার ইতিকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায়ে দু’জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা ইতির পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রবিবার (৩১ জানুয়ারি) পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ গোলাম কিবরিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ইতির মামাতো ভাই মেহেদী হাসান স্বপন (২২) ও তার বন্ধু সুমন জোমাদ্দার (২০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার ৯ বছরের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ইতি। সে হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ইতি উপজেলার বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামে তার নানা মোঃ আব্দুর রব মাস্টারের বাড়িতে থাকতো।
২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে ইতি নানার একটি গরুকে স্কুল মাঠে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয় সে। পরদিন দুপুরে প্রতিবেশী শাহজাহান জমাদ্দারের বাগানে শিশুটির নগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ইতির বাবা ফুল মিয়া ৬ অক্টোবর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ইতির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠায়।
ময়না তদন্ত রিপোর্টে জানা যায়, ইতিকে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ইতির মামাতো ভাই ও তার বন্ধু সুমনকে আটক করে।
এরপর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি মঠবাড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস মামলাটি তদন্ত শেষে ইতির মামাতো ভাই স্বপন ও তার বন্ধু সুমনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায়। পরে সুমন জোমাদ্দার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে সে দোষ স্বীকার করে বলে, বন্ধু মেহেদী হাসান স্বপনের প্ররোচনায় তারা দু’জনে মিলে ওই দিন ইতিকে বাগডাশ (মেছোবাঘ) দেখানোর কথা বলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহজাহান জমাদ্দারের বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা ইতিকে ধর্ষণ শেষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুর রাজ্জাক খান বাদশা বলেন, ইতির মামাতো ভাই মেহেদী ইতির বড় বোন বিথিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এতে বিথির পরিবার রাজি না হওয়ায় স্বপন প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে তার বন্ধু সুমনকে নিয়ে ইতিকে ধর্ষণ ও হত্যা করে। ইতির বাবা ও নানা বাড়ির লোকজন এ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। আর এ সুযোগে স্বপন বিথিকে অপহরণ করে পালিয়ে যাবে। তবে এর আগেই স্বপন ধরা পরে।
আদালতের বিচারক মোঃ গোলাম কিবরিয়া ৯৮ পৃষ্ঠার রায়ের মূল অংশ পাঠ করে বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশে মেহেদী ও সুমনের মতো জঘন্য অপরাধীদের বেঁচে থাকার সুযোগ দেওয়া হলে এ ধরনের অপরাধীরা অপরাধ কাজে উৎসাহিত হবে।’
ইতির বাবা ফুল মিয়া আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।