- হোম
- >
- বাংলা ও বাঙালি
- >
- বাঙালির মহাকবি মাইকেল
বাঙালির মহাকবি মাইকেল
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
‘মহাকবি মাইকেল’ এ নামেই বাঙালির কাছে সুবিদিত তিনি। জন্মেছিলেন ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে— অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে। ঐতিহাসিক বাংলা দেশের প্রাচীন জেলাশহর যশোরে। তখন বলা হতো ‘যশোহর’। গোটা উনিশ শতকে একাই করতলে রেখেছিলেন বাংলা সাহিত্যকে। বাঙালির সাহিত্যাকাশে অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্রের খুবসংক্ষিপ্ত তালিকাতেও আজ অব্দি তাঁর নাম সুনিশ্চিত। পিতৃদত্ত নামে— মধুসূদন দত্ত। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার আলোকবর্তিকা নিয়ে এসেছিলেন বিশ্বসাহিত্যের এই মহাবীর। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ধারারই প্রকৃষ্ট সূচনা মধুসূদনের হাত ধরে।
উচ্চাভিলাষ ছিলো জগৎ জোড়া খ্যাতিমান সাহিত্যিক হবেন। তাই কমলকানন বাংলা ছেড়ে শুরু করেছিলেন শৈবাল ইংরেজিতে সাহিত্যচর্চা। বিলেতে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্রহণ করেছিলেন খ্রিষ্টধর্ম। কিন্তু তাতেও মনজয় করতে পারেন নি দাম্ভিক বৃটিশদের। জীবনযুদ্ধের নির্মম শিক্ষা তাঁকে ফিরিয়েছিলো ফের বাংলাতেই। ততোদিনে নিঃসঙ্গ মহাবীরের মতো দশা তাঁর। তবু লড়লেন, এবং ফুরিয়ে যাবার আগেই আনেক কিছু দিয়ে গেলেন বাংলা সাহিত্যকে।
আগেই বলেছি, বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের অগ্রপথিক তিনিই। গৎবাঁধা ছন্দের গণ্ডি থেকে বাংলাকে-বাঙালিকে নিয়ে গেলেন অমিত্রাক্ষর ছন্দের সুবিস্তৃত তেপান্তরে। লিখতে শুরু করলে চতুর্দশপদী। তাও শেক্সপীয়র বা পেত্রাকীয় রীতিতে নয়, রীতিমতো নতুন মিলবিন্যাস বা রীতি সৃষ্টি করে। লিখলেন প্রহসন আর মহাকাব্যও। যখন বিশ্ব ভুলে গেছে ‘মহাকাব্য’র গাম্ভীর্য, মধুসূদনই প্রমাণ করলেন— মহাকাব্যের যুগ এই অধুনাতেও লুপ্ত নয়। বাঙালি পেলো ‘মেঘনাদ বধ’। গালমন্দ করলো অনেকেই, বললো হয় নি কিচ্ছুই। না সংস্কৃত, না গ্রীক। মধুসূদন জানিয়ে দিলেন— এটা বাংলা মহাকাব্য; অতএব সংস্কৃতি প্রদান বা গ্রীক অনুশ্রিত মহাকাব্য হবার দরকারও নেই তার।
উপমহাদেশীয় সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের পর প্রয়াস পেয়েছিলেন ইউরোপীয় পৌরাণিক দৃষ্টিভঙ্গির পুনর্পাঠেও। শুরু করেছিলেন ‘হেক্টরবধ কাব্য’, অবশ্য শেষ করে যেতে পারেন নি।
মধুসূদন সাগরের মতো সুবিশাল। কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদের ভাষায়, বাংলা সাহিত্যের “শতাব্দী কাঁপানো উল্লাসের নাম মধুসূদন”, সেই মধুসূদনকে আমরা আজও বুঝতে অপারগ, অসমর্থ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।