কুড়িগ্রামে শীতে ২ জনের মৃত্যু
শফিউল অালম শফি
প্রিন্টঅঅ-অ+
কয়দিন থাকি কাজ নাই ঘড়ত খাবার নাই গরম কাপড় নাই জারোত বাচিঁ বাহে, ওয়াপদা বাধেঁর রাস্তায় থাকি। কেউ হামার খোঁজ নেয় না। ঠাণ্ডা খাতে খাতে জীবন শ্যাষ। বাধেঁর কছিরন (৮০) ঠাণ্ডা খাইতে খাইতে মরি হেইল। কথাগুলো বলেছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভেলাকোপা গড়ের পাড় এলাকার ছবরন বেওয়া (৬০)।
এতিম পাঁচ নাতি-নাতনি নিয়ে ছাত্রদের মেসে রান্না করে কোন রকমে সংসার চলান তিনি। তার উপর গরম কাপড় কেনাটা তার নিকট দুঃস্বপ্নের মতো। হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গরম কাপড়ের অভাবে মহাবিপাকে পড়েছেন ছবরন বেওয়ার মতো হতদরিদ্র হাজারো মহিলা।
গত ২ দিন ধরে কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ জেলায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
উত্তরীয় হিমেল হওয়ায় ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কাজে যেতে পারছে না শ্রমজীবি মানুষেরা।
সরেজমিন ভিতরবন্দ ও নুনখাওয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে গরম কাপড়ের অভাবে গরীব ও দুস্থ পরিবারগুলোর শিশু ও বৃদ্ধরা মহাবিপাকে পড়েছে।
নুনখাওয়ার ওয়াপদা বাধেঁর বাসিন্ধা জমির উদ্দিন (৭৫)ঠাণ্ডাজনিত কারণে মারা গেছে। এ ছাড়া নুনখাওয়া ব্রম্মপুত্র নদের অববাহিকার চর ও দ্বীপচরের মানুষজনসহ ঠাণ্ডায় রেহাই পাচ্ছেনা গবাদি পশুরাও। বোরো মৌসুম শুরু হলেও কনকনে ঠাণ্ডায় মাঠে কাজ করতে পারছে না কৃষি শ্রমিকরা। অনেকে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ জুটছে না।
নাগেশ্বরীর ভিতরবন্দ এলাকার কৃষি শ্রমিক আবুল হোসেন জানান, আমরা গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। ঠাণ্ডা হলেও উপায় নাই, কাজে না গেলে না খেয়ে থাকতে হবে। এজন্য জমির রোয়া লাগানোর কাজ করছি। কিন্তু ঠাণ্ডায় জমিতে থাকা যায় না। একটু খানি কাজ করে আবার উপরে উঠতে হয়। বোরো মৌসুম শুরু হলেও চারা লাগাতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
কড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শওকত আলী জানান, হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জমিতে চারা লাগানোর কাজ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। তবে দু-চারদিন দেরিতে চারা লাগালেও ফসলের কোন সমস্যা হবে না।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, হঠাৎ করে শীতের মাত্রা বেড়ে গেছে। আমরা ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ৩০ হাজার কম্বল বিতরণ করেছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে বরাদ্দ চাওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আজ এ জেলার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ অবস্থা আরো দু-একদিন চলতে পারে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।