‘শুধু সিগারেট খাওয়ার জন্য ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে’
নতুন এক গবেষণা শেষে এক চাঞ্চল্যকর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে যে, ধূমপান ত্যাগ না করলে ২০ বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন তরুণের একজন অকালে মারা যাবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ‘চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব মেডিসিন সায়েন্স ’এবং ‘চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’ এই গবেষণা চালায়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, চিনের দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষ ২০ বছর হওয়ার আগেই ধূমপান শুরু করে। তাদের প্রায় অর্ধেক এই বদঅভ্যাসের কারণে মারা যাবে। গবেষকরা ১৫ বছর ধরে চিনজুড়ে দুবার এই সমীক্ষা চালান। গবেষণায় হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। ২০১০ সালে চিনে তামাক সেবনের কারণে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বে চিনেই সবচেয়ে বেশি মানুষ ধূমপান করে। বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনজন ধূমপায়ীর একজন চিনের নাগরিক। এছাড়া, চিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় তামাক উৎপাদনকারী দেশ। দেশটির মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ ধূমপান করে। বড় উদ্বেগের বিষয় হল, চিনে মোট পুরুষের অর্ধেকের বেশি ধূমপায়ী। মহিলাদের মধ্যে এ হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ। গড়ে একজন ধূমপায়ী দৈনিক ২২টির মতো সিগারেট পান করে। আর তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর আরোপ করে সরকারের বাৎসরিক আয় প্রায় ৪২ হাজার ৮০০ কোটি ইয়েন।
গবেষকরা বলেন, যদি বর্তমান অবস্থা বিরাজমান থকে তবে ২০৩০ সাল নাগাদ চিনে তামাক জনিত রোগে ভুগে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ হবে, যাদেরঅধিকাংশই হবে পুরুষ। ক্রমবর্ধমান এই অকাল মৃত্যু এক সময় মহামারী রূপ নেবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন গবেষকরা।
বেজিংয়ের জনবহুল স্থানে ধূমপান এখনও নিষিদ্ধ নয়। দামী ব্র্যান্ডের সিগারেটের প্যাকেট সুন্দর করে সাজিয়ে অনেক সময় উপহার হিসেবেও দেওয়া হয়। সাধারন ব্র্যান্ডেরসিগারেট সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। সাধারণ মানের একটি সিগারেটের দাম মাত্র ২ দশমিক ৫ ইয়েন। দেশের নাগরিকদের কাছে ধূমপান মজ্জাগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের দৈনন্দিন জীবনে অংশ হয়ে উঠেছে সিগারেট। দেশটিতে খুব কম সংখ্যক ব্যক্তিই ধূমপানের ক্ষতিসম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, চিনে মাত্র ২৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ফুসফুসের ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো অসুখের জন্য ধূমপানকে দায়ী করে। এছাড়া, মাত্র ১০ শতাংশ ধূমপায়ী নিজের ইচ্ছায় ধুমপান ত্যাগ করে। বাকি যারা ধূমপান ত্যাগের চেষ্টা করছে তারা আসলে বাধ্য হয়ে চেষ্টা করছে। ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে বেজিং সরকার ধূমপান বিরোধী প্রচার শুরু করেছে।
সহ গবেষক রিচার্ড পেটো বলেন, সব আশা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। যদি জনগণকে ধূমপানের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে এ বদঅভ্যাস ত্যাগ করানো হয় তবে এখনও আশাআছে। এ মহামারী আটকে দেওয়ার একমাত্র উপায় হল এখনই (ধূমপান) বন্ধ করা। আর আপনি তরুণ হলে ধূমপান শুরু করবেন না বলে আবেদন রাখা হয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।