২৮ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা আ.লীগ সম্মেলন
শফিউল আলম
প্রিন্টঅঅ-অ+
বহুপ্রতিক্ষীত কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ২৮ জানুয়ারি। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণার খবর পেয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে আবারো চাঙাভাব ফিরে এসেছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা আ.লীগের সম্মেলন হচ্ছেনা প্রায় ১ যুগের ও বেশি। তৃণমূলের চাপে এ পর্যন্ত জেলা কমিটির সম্মেলনের জন্য পাঁচ দফা তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ছিল সম্মেলন হওয়ার সর্বশেষ তারিখ। নানামুখী তৎপরতায় সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।
দলের নেতারা জানান, ২০০৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কে এম মোজাম্মেল হক সভাপতি ও সালাহ উদ্দিন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালের ২৭ মে এ কে এম মোজাম্মেল হক মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান সহসভাপতি এ কে আহমদ হোসাইন।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চান সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার নেতৃত্ব তৈরি হোক। সম্মেলন হলে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসতিয়াক আহমদ জয় বলেন আমরা চাই জেলা আ.লীগে নেতা নির্বাচনে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দেয়া হোক, তাহলে জেলায় আসবে নতুন নেতৃত্ব সুসংগঠিত হবে জেলার আওয়ামী রাজনীতি।
দলের একাধিক নেতা দাবি করেন, জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার কোন্দলের কারণে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটে। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার আটটি উপজেলার মধ্যে টেকনাফ, চকরিয়া ও মহেশখালীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করলেও অন্য পাঁচটিতে জিতেন বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী।
কক্সবাজার জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ কে আহমদ হোসেন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর আবারো মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আগামী নেতৃত্ব গ্রহণে ইচ্ছুক নেতারা। বার বার তারিখ ঘোষিত হওয়ার পর জেলা সভাপতি পদের জন্য যারা ইতোমধ্যে প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে মাঠে ছিলেন তারা হলেন-বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একে আহমদ হোসেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী। চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলম এমএ।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য রাশেদুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদ।
কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে আবারো সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা খুশি। কাউন্সিলরগণ ভোট দিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অনেকেই।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, তরুণ নেতৃত্বই সব সময় দল ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে এসেছে। আর তরুণদের মাঝেই গণতন্ত্রের চর্চা বেশি পরিলক্ষিত হয়। এ কারণে আমরা তরুণরা সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে উঠুক এমনটি দাবি করছি। কিন্তু ঘাপটি মেরে থাকা কিছু সুবিধাভোগী নিজেদের সুবিধার জন্য সম্মেলনের বিরোধিতা করে নানা চলচাতুরিতে পকেট কমিটি গঠন কিংবা কমিটি রদ করার চেষ্টা করে এসেছে। অবশেষে জেলা সম্মেলনের নতুন করে তারিখ ঘোষণা হওয়ায় তরুণ নেতৃত্বের মাঝে আবারো আশা জেগেছে। ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে দলে শৃঙ্খলা ফিরাতে তৃণমূলের নেতারা যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে ভুল করবেন না বলে মনে করেন তিনি।
সম্মেলন প্রত্যাশী অন্য প্রার্থীদের মাঝেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের রায়ের প্রতি সম্মান পরিলক্ষিত হয়েছে। তাদের মতে, দলীয় কোন্দল আর নেতা-কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তা দূর করতে সম্মেলনের বিকল্প নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শনিবারের সভার পর আগামী ২৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার জন্য তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন দ্রুত শেষ করে নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক এগিয়ে যাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন আগামীর এ সভাপতি প্রার্থী।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।