স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরকারি স্বীকৃতি পাননি মহেশখালীর মাস্টার নুরুল ইসলাম। বিগত ২০১১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম লেখা হলেও তা গেজেটে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা সনদ না থাকায় শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসরের ৫ বছরেও পেনশন পাননি স্বাধীনতা সংগ্রামের এই নায়ক।

তিনি এখন প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। হাঁটা চলা করতে পারছেন না। ঘরের কোনায় বসে বসে জীবনের শেষ প্রহর গুনছেন। দু’মুটো অন্ন জোগাতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশের তরে অস্ত্র কাঁধে নেওয়া এই মহান ব্যক্তির। তার জীবনের এখন শেষ লক্ষ্য মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি আদায়।  

মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন টগবগে যুবক। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। পাক হানাদারের কবল থেকে দেশমুক্ত করতে অংশ নিয়েছিলেন মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের কারণে পাক সরকারের কালো তালিকার ১৮ নম্বর আসামী তিনি। আওয়ামী লীগ করার অপরাধে তাকে অনেক নির্যাতন সইতে হয়েছে বিরোধী শক্তির কাছে। কিন্তু এখনো মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে ওঠেনি তার নাম। 

মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল ইসলাম মহেশখালীর উপজেলার হোয়ানক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। দীর্ঘ ৩৫ বছরের শিক্ষকতা পেশা থেকে ৫ বছর আগে অবসর নেন। তার বাড়ী উপজেলার হোয়ানকের হরিয়ারছরা গ্রামে। ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় তাকে। অভাব অনটন আর বুক ভরা যাতনা নিয়ে জীবন পার করছেন তিনি। দেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলেও নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুন পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি এই মুক্তিযোদ্ধার। 

মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল ইসলাম বলেন, আমি ১ নম্বর সেক্টরের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। আওয়ামী লীগ করার অপরাধে অনেক নির্যাতন সয়েছি। ভেবেছিলাম আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আমাকে স্বীকৃতি দিবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এখনও ক্ষমতায় থাকলেও তাদের কাছ থেকেও কোন স্বীকৃতি আদায় করতে পারিনি। জীবন সায়াহ্নে এখন আমার শেষ ইচ্ছা মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি আদায়।