পোশাক খাতে ১৬ ধাপে দুর্নীতি : টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তৈরি পোশাক খাতের সরবরাহ চক্রে ১৬টি ধাপে দুর্নীতির চিত্র পেয়েছে । বৃহস্পতিবা ধানমণ্ডি টিআইবি’র কার্যালয়ে তৈরি পোশাক খাতের সাপ্লাই চেইনে অনিয়ম ও দুর্নীতি মোকাবেলায় অংশীজনের করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের সাপ্লাই চেইনের প্রায় পুরো প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। পণ্যের মান, পরিমাণ ও কমপ্লায়েন্স এর ঘাটতি ধামাচাপা দেওয়া হয় ঘুষের মাধ্যমে। অংশীজনের সুশাসন ও জবাবদিহিতাহীন এই ধরনের পরিবেশে সর্বোচ্চ মুনাফার জন্য চাঁদাবাজি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের সমন্বয়ে গবেষণষায় তৈরি পোশাক খাতের সাপ্লাই চেইনের ১৬টি ধাপে দুর্নীতি পাওয়া গেছে।
এ তিন পর্যায়ের ১৬টি ধাপে বলা হয়েছে, আমদানিকারকের সঙ্গে স্থানীয় এজেন্ট/বায়িং হাউইজের সঙ্গে যোগাযোগ, কমপ্লায়েন্ট কারখার সঙ্গে যোগাযোগ, কার্যাদেশ প্রদান, মূল্য নির্ধারণ/দরকষাকষি, স্যাম্পল করার নির্দেশ, মাস্টার এলসি-ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলা, উৎপাদনের কাঁচামাল/দ্রব্য ক্রয়/আমদানি, পণ্যের মান ও কমপ্লায়েন্ট পরিদর্শন, প্রাক জাহাজীকরণ পর্যায়ের মান পরিদর্শন ও জাহাজীকরণ (এফওবি/সিঅ্যান্ডএফ) ধাপে দুর্নীতি হয়ে থাকে।
২০১৩ সালের এ খাতে ৬৩টি বিষয়ে সুশাসনের ঘাটতি চিহ্নিত করা হয়েছিল। এসব ঘাটতির মধ্যে সরকার, মালিক ও বায়াদের ১০২টি উদ্যোগ নেওয়ার ফলে তৈরি পোশাক খাতে ৬০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি এ জন্য সরকার, কারখানা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ খাতের অগ্রগতি ৬০ শতাংশ হলেও তা বাড়াতে সবাইকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কিছু পদক্ষেপ নিলে তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতি আরও বাড়বে।
এ খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে ২৭ দফা করণীয় ও সুপারিশ করে টিআইবি। এর মধ্যে সরবরাহকারী কারখানার পক্ষ থেকে যে কোনো ঘুষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিক কারখানা নিরীক্ষণ ও পরিদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনে বায়ার কার্যাদেশ বাতিল ও কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে, বায়ারদের নৈতিকতা ও ব্যবসায়িক আচরণ সম্বলিত নৈতিক আচরণবিধি রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রতি কারখানার জন্য আলাদা শনাক্তকারী নম্বরের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পরিশোধ করতে সরকারকে একটি তদারকি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও শ্রম মন্ত্রণালয়কে নীতি প্রয়োগে কঠোর হতে হবে।
এ সময় টিআইবির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম, রিসার্স অ্যান্ড পলিসি বিভাগের অ্যাসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।