হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
হিলি প্রতিনিধি
প্রিন্টঅঅ-অ+
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদিবাসিদের জীবন মানউন্নয়নে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে হিলিবাসির পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে হিলি স্থলবন্দর কাঁচাপণ্য আমদানীকারক গ্রুপের আহবায়ক হারুন উর রশিদ হারুন।
স্থানীয় নবারুন পাঠাগার ও ক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হারুন উর রশিদ হারুন অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাকিমপুরে যোগদানের পর থেকে ব্যপক অনিয়ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাত, সরকারি কাজে অনিহা প্রকাশসহ নানা অপকর্ম তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও জানান, তিনি জমি খারিজ, পুকুর লিজ, খাস জমি বিতরণ, গুচ্ছগ্রাম তৈরী, হাট-বাজার লীজ, আদিবাসির বিভিন্ন প্রকল্প, খাসমহল হাট-বাজারের লাইসেন্স প্রদান, চল্লিশ দিনের কর্মসুচি, এডিপি হতে ভুয়া প্রকল্প, অফিসারর্স ক্লাবের ভুয়া প্রকল্প, বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ, সরকারি গাছকর্তন, মোবাইল কোর্ট, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে চাঁদা উত্তোলন করেছেন ওই ইউএনও।
গত তিন বছরে সরকারি বরাদ্ধ আদিবাসিদের মান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। এসিল্যান্ড না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন নিজেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আজাহারুল ইসলাম। খাসমহল হাট ও বাজারের দোকানের লাইসেন্স দিতে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের নামে বাড়তি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয় তাকে, না দিলে তার দোকানঘর ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। আবার টাকা দিলে ঘরের লাইসেন্সের কাগজপত্র দেওয়া হয়। দোকান ঘর মেরামত করতে উৎকোচ না দিলে লোক ডেকে তার ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়। কর্তাবাবুদের জন্য ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ দিলে আবার সব ঠিক। জমির নামজারিতে দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা।
তিনি ক্রীড়া, সংস্কৃতি বাবদ এডিবি’র ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত করেছেন। নিম্ন মানের সরঞ্জামাদি দিয়ে নিজ উদ্যোগে তৈরী করেছেন গুচ্ছগ্রাম যা, এখনি নষ্ট হওয়ার পথে। ভুমিহীন নামীয় কিছু দালালের সাথে গোপন সখ্যতা বজায় রেখে অর্থের বিনিমিয়ে খাসজমি বিতরণ করছেন। আবার একই ভাবে খাস পুকুরও লিজ দিচ্ছেন তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার ও বাজারে ঝড়ে পড়া মুল্যবান গাছগুলো ও উপজেলা পরিষদের স্কুল মাঠে রাখা গাছগুলো সরকারি নিয়ম না মেনে করাত মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। আর ভ্র্যাম্যমান আদালতের নামে উপরি টাকাও হাতিয়ে নিয়ে তিনি তার ব্যাক্তি আক্রোশ মিটিয়ে নিচ্ছেন। গত ১৪-১৫ অর্থবছরের এডিপি শেষ বিশেষ বরাদ্দ ২৫ লক্ষ টাকা নামমাত্র কাজ করেছেন। এতে এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কঠিন ভাবে ব্যহত হচ্ছে। এতে সরকারেরও ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে হাকিমপুর উপজেলা আদিবাসিদের সাধারণ সম্পাদক গ্রে গৌরী জীবন, বাংলাহিলি কাষ্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন, সাবেক উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহীন, জামিল হোসেন চলন্ত, প্রতাপ মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।