মৃত্যুপূর্বে মায়ের সাথে মাদরাসা ছাত্র সালমানের শেষ কথোপকথন
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
‘মা আমারে আর-ই নাম্বারও পাইতায় নায়। নয়া মোবাইল ও সিম কিনলে, নতুন নাম্বার দিমুনে। হুজুররা মোবাইল অপারেশেন কইরা আমার মোবাইলটা নিছইগি (সিজ) করেছেন’। কথাগুলো সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরস্থ জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসার ফজিলত ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সালমান আহমদ (১৭)’র।
দুস্কৃতকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পূর্বে (২৯ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা) নিহত সালমান তার মা কুতুবি বেগমকে একথাগুলো বলেছিল।
সালমানের মায়ের বরাত দিয়ে তার মামা মাওলানা আতিকুর রহমান ও প্রতিবেশী নাজমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, সালমান মাদরাসার বোর্ডিংয়ে থেকে লেখাপড়া করার কারণে বাড়ির খবরা-খবর রাখার জন্য সে (সালমান) মোবাইল ব্যবহার করে আসছিল।
ছেলে হত্যার বিচার পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সালমানের মা কুতুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে আমাকে নতুন নাম্বার দেয়ার কথা বললেও, আর নাম্বার দিতে পারেনি সে। চলে গেল সে না ফেরার দেশে। আর কোনো দিনও তাকে (সালমান) দেখতে পারব না আমি, এমনকি কথাও বলতে পারব না।
বিশ্বনাথ থানার এসআই সুমন সরকার বলেন, সালমান হত্যার আসল রহসৎ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সালমান আহমদ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগাঁও গ্রামের বাকপ্রতিবন্দি ছোটন মিয়া ও কুতুবি বেগম দম্পত্তির সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে সে মাদরাসার বোডিং-এ থেকে লেখাপড়া করে আসছিল। ৩০ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার নতুন বাজার এলাকার তফজ্জুল আলী কমপ্লেক্স ও মাদরাসার প্রিন্সিপাল (মুহতামিম) মাওলানা শিব্বির আহমদের বাসার মধ্যবর্তী সড়কে সালমান আহমদের লাশ পাওয়া যায়। এর পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সালমানের মা কুতুবি বেগম বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২০ (তাং ৩১/১২/২০১৫ইং)।
মামলার লিখিত অভিযোগে বাদিনী উল্লেখ করেছেন যে তিনি ধারণা করছেন, মরহুম মাওলানা আশরাফ আলীর পুত্র ও মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদের ছোট ভাই মহসিন উদ্দিন নাঈন অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারীদের যোগসাজশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর (বাদিনী) পুত্র সালমানকে হত্যা করেছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।