শিশুকন্যাদের ওপর যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রে কঠোর সাজার পক্ষপাতী সুপ্রিম কোর্ট। যদিও দোষীর লিঙ্গচ্ছেদের সাজায় সায় নেই শীর্ষ আদালতের।

সু্প্রিম কোর্টের মহিলা আইনজীবীদের সংগঠন (এসসিডবলিউএলএ) এক পিটিশন পেশ করে সওয়াল করেছিল, শিশু ধর্ষণের মতো অপরাধ রোধ করা সম্ভব একমাত্র দোষীর লিঙ্গচ্ছেদের বিধি থাকলেই। পিটিশনে শিশু ধর্ষণকারী ও শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহকারীদের অতিরিক্ত সাজা হিসাবে লিঙ্গচ্ছেদের ব্যবস্থা রাখার কথা বিবেচনা করতে ভারত সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল তারা।

কিন্তু সেই ধারনার সঙ্গে সহমত নয় সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি এন ভি রামান্নাকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ শিশুকন্যা ধর্ষণকারীর সাজা বাড়ানোর প্রশ্নে সংসদের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছে। বেঞ্চের মত, শিশুকন্যাকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দিতে ফৌজদারি বিধি সংশোধনের কথা ভেবে দেখতে পারে সংসদ, এমনকী ধর্ষণের মতো অপরাধের প্রেক্ষাপটে ‘শিশু’ শব্দটির সংজ্ঞাও ঠিক করতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের মহিলা আইনজীবীদের লিঙ্গচ্ছেদের সাজা কার্যকর করার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে বেঞ্চ বলেছে, সংসদ ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এ ধরনের ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবতে পারে। ধর্ষণের কথা মাথায় রেখে শিশু শব্দের সংজ্ঞাও ঠিক করতে পারে।

যদিও মহিলা আইনজীবী সংগঠনের মূল ভাবনার সঙ্গে সহমত বেঞ্চ। সংগঠনটির বক্তব্য, ধর্ষণের ক্ষেত্রে দশ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকন্যাদের কখনই অন্য নাবালিকাদের সমান ধরা যায় না। আইনজীবী সংগঠনটির কৌঁসুলি সওয়াল করেন, একটি ধর্ষিতা শিশুকন্যার যন্ত্রণার কথা মাথা রেখে এমন কিছু করা দরকার যাতে অপরাধীদের মনে ভয়, আতঙ্ক ঢুকে যায়।

সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতাগি বলেন, আদালত কোনও নির্দিষ্ট সাজার সুপারিশ করতে পারে না। তাঁর বক্তব্যে সহমত জানিয়ে বেঞ্চ মন্তব্য করে, কখনও সেন্টিমেন্ট বা আবেগের বশবর্তী হয়ে আইন তৈরি করা উচিত নয়। রোহতাগি বলেন, ধর্ষণে দোষীদের লিঙ্গচ্ছেদের দাবিটির পিছনে যুক্তিসঙ্গত ভাবনার চেয়ে রয়েছে বেশি আবেগ, ক্রোধ।

শিশু ধর্ষণে দোষীকে কঠোর সাজা দিতে আইন সংশোধন করতে পারে সংসদ।