হাকালুকি হাওরের প্রাকৃতিক জলজ বন ধ্বংসের পায়তারায় লিপ্ত একটি সংঘবদ্ধ চক্র
এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে প্রাকৃতিক জলজ বন ধ্বংসের পায়তারা লিপ্ত একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ইতোমধ্যে দু’শতাধিক একর প্রাকৃতিক জলজ বন ধ্বংস করা হলেও স্থানীয় ভিসিজির লোকজন স্থানীয় ইউএনও, ওসি এবং বনবিভাগের কাছে অভিযোগ করলেও থেমে নেই সংঘবদ্ধচক্র। এই ধারা অব্যাহত থাকলে হুমকির মুখে পড়বে হাওরের পরিবেশ।
সরেজমিন পরিদর্শণে গেলে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলা অংশের সাতবিলা ও ফুয়ালা বিলের কান্দায় অবাদে চলছে প্রাকৃতিক জলজ বন ধ্বংসযজ্ঞ। ইতোমধ্যে দু থেকে আড়াইশ একর জমির জলজবন ধ্বংস করে বিরানভুমিতে পরিণত করা হয়েছে। এসব বনভূমি ধ্বংস করে কৃষি জমিতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে উঠা এই জলজবনে হিজল করচসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৬ থেকে ৭ ফুট লম্বা গাছগাছালি ছিলো। এসব জলজবন সংরক্ষণের জন্য বর“দল ভিসিজি ও হাকালুকি জাগরণী ভিসিজির ৪ জন পাহারাদার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। তারাই জলজবন ধ্বংসকারী বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের কাজিরবন্দ গ্রামের মসাইদ আলী (৫০), সুরুজ আলী (৩৫), মন্তাজ আরী (৩০), লোকমান (৪০) এবং তাদের ১৫-২০ জন সহযোগিদের নামে বাড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকার্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভিসিজি গার্ড মাতাব উদ্দিন, মখলিছ আলী, কবির আহমদ ও ফখর উদ্দিন জানান, গত ১০ নভেম্বর হতে উক্ত চক্রটি পর্যায়ক্রমে জলজবন ধ্বংস করছে। যা এখনও অব্যাহত আছে। তাদের অভিযোগের পর বড়লেখা থানার এসআই স্বপন সরকার সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। কিন্তু জলজবন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বনধ্বংসকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের পক্ষে রোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের হাকালুকি হাওর এলাকায় নিয়োজিত বিট অফিসার মোনায়েম হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি জানেন। এব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কোন আইন নেই। জলাভূমি সংরক্ষণ আইনে তিনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন না। তাছাড়া তার বাবা মারা যাওয়ায় কয়েকদিন ছুটিতে ছিলেন। ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে কোন পদক্ষেপ নিলেন না কেন? এর জাবাবে তিনি জানান, আমার কাছে লোকবল নেই।
বড়লেখা থানার এসআই স্বপন সরকার জানান, আমি সরেজমিন পরিদর্শণ করেছি। এটাতো বন বিভাগের ব্যাপার। তারাই ব্যবস্থা নেবে। তবে আমি দেখেছি বেশ কিছু এলাকার বন ধ্বংস করে সরিষা লাগানো হয়েছে। তবে তার পরিদর্শণের পর কেউ আর বন কাটছে না বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা ইসিএ কমিটির সভাপতি ও বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল্যাহ আল মামুনের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে একাধিক দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে, তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।