ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পর্ণোগ্রাফী মামলার আসামি সুমন গ্রেপ্তার এড়াতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে পুলিশ ও এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নালিশী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সুমনের পিতা সেকেন্দার আলী বাদি হয়ে আদালতে দন্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় এমপি ৭/২০১৬ নং নালিশী মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে ঝালকাঠি থানার এসআই জসিম উদ্দিন, পুলিশ সদস্য পিকআপ ভ্যানচালক আসাদ ও বাংলাদেশ সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহাজাদা মহসীন পড়াগ।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নালিশী অভিযোগ আনা হলে আদালতের বিচারক যুক্তি চেয়ে বাদি পক্ষের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, পুলিশের বিরুদ্ধে কোন আইনে এ মামলা হবে। এছাড়াও ঘটনার দিন এসআই জসিম ডিউটিতে ছিল কিনা, কি কারণে সুমনকে ধরতে গিয়েছিল ওসির কাছে জানতে চেয়ে এসআই জসিমের কর্তব্যরত কাগজ, নিহত সুমনের সুরতহাল ও ময়না তদন্ত রিপোর্ট এবং ইউডি মামলার কগজপত্র তলব করা হয়েছে।

আদালত এব্যাপারে আগামী ১৪ জানুয়ারী পূর্ণাঙ্গ শুনানীর জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেছেন।

অপরদিকে পর্ণোগ্রাফী মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামি লিমন নকিবকে ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে।

এ মামলার ব্যাপারে নালিশী মামলার আসামি সাংবাদিক শাহাজাদা মহসীন পড়াগ জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ লিমন নকিব, সুমনসহ অজ্ঞাতনামা দুই মহিলাসহ ৫ জন আমাদের বাসায় প্রবেশ করে আমার বাবা কাঞ্চণ আলী খানকে মারধর করে। একপর্যায়ে বাবাকে চাকু দেখিয়ে প্যান্ট খুলে মেয়েদের দেখিয়ে বলে এই মেয়েদের সাথে অবৈধ মেলামেশা করেছে। তখন তাদের মধ্যে একজন বাবার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভয়ে আমার বাবা ঘরে এক জায়গায় নগদ ২৭ হাজার টাকা রাখা আছে বলে জানায়। তখন লিমন নকিব সেখান থেকে ওই টাকা নিয়ে তার দলবলসহ বাসা থেকে হুমকী দিয়ে বেড়িয়ে যায় যায়। এ ঘটনার পর আমার বাবা ঝালকাঠি থানায় লিমন ও সুমনের নাম উল্লেখ করে ৭ জনের নামে পর্ণোগ্রাফি ধারায় মামলা দায়ের করে।

এব্যাপারে এসআই জসিম জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর ঐ মামলার আসামি লিমনকে গ্রেপ্তার করার পর সুমনকেও গ্রেপ্তার করতে যাই। তখন সে দৌড়ে গিয়ে সুগন্ধা নদীতে ঝাপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পানিতে তলিয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে নিহত সুমনের বাবা গতকাল আদালতে উদ্দেশ্যমূলক একটি মামলা করেছে বলে শুনেছি।

সুমনের বাবার আইনজীবী মানিক আর্চায্য জানায়, পুলিশের বিরুদ্ধে কোন আইনে মামলা হবে তা জানতে চেয়ে আগামী ১৪ জানুয়ারী মামলাটির শুনানীর দিন ধার্য্য রাখা হয়েছে। ঐদিন আমরা আদালতে আমাদের জবাব ও যুক্তিতর্ক তুলে ধরব।