ট্রেনে কিশোরীকে গণধর্ষণ সেনাদের
ভারতে ট্রেনের ভেতর ১৪ বছর বয়সী কিশোরী কয়েকজন মাতাল সেনা সদস্যের গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। কলকাতার হাওড়া থেকে অমৃতসরগামী একটি ট্রেনে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত এক সেনাসদস্যকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। রবিবার রাতে মেয়েটিকে অর্ধ-অচৈতন্য অবস্থায় জওয়ানদের কবল থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ।
জানা যায়, মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার পর দমদমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েটির বাড়ির লোক। এরপর ওই সংস্থাটি খোঁজে নামে মেয়েটির। তাদের সঙ্গে ছিল মেয়েটির ছবিও। তারা এও জানতে পেরেছিল, মেয়েটি অমৃতসর এক্সপ্রেসে উঠেছে। কিন্তু ওই বার্তা যতক্ষণে হাওড়া রেল পুলিশের কাছে আসে, ততক্ষণে ট্রেন চলে গেছে অনেক দূর। পেরিয়ে গেছে আসানশোল। অগত্যা পরের স্টেশন ঝাড়খন্ড পুলিশকে সতর্ক করে হাওড়া রেল পুলিশ। সন্ধ্যে ৬টার দিকে ঝাড়খন্ডের ডিজির কাছ থেকে ফ্যাক্স পায় যশিডি জিআরপি। যৌথ তল্লাশিতে নামে জিআরপি এবং আরপিএফ। ঝাড়খন্ডের মধুপুরে ট্রেনটিকে ৭ মিনিট দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়।
রেল পুলিশ সূত্রে জানায়, কামরাগুলি খুঁজতে খুঁজতে তল্লাশির দল এসে পৌঁছায় সংরক্ষিত সেনা কামরার সামনে। দরজা বন্ধ ছিল। খানিকটা ধাক্কাধাক্কি করে দরজা খুলতেই মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায় একটি মেয়েকে। এক জওয়ান তার কাছে ছিল। মেয়েটিকে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করছিল সে। মেয়েটির জ্ঞান ছিল না পুরো। ছবি মিলিয়ে দেখে জিআরপি এবং আরপিএফ নিশ্চিত হয়, এই কিশোরীকেই খুঁজছে তারা।
মেয়েটি একটু ধাতস্থ হওয়ার পরে রেল পুলিশকে জানায়, সে লুধিয়ানা যাবে বলে অমৃতসর এক্সপ্রেসে চড়েছিল। জায়গা খুঁজতে খুঁজতে ফাঁকা কামরা দেখে ঢুকে পড়ে। তাকে দেখে সেনা-জওয়ানরা বসার জায়গা করে দেয়।
মেয়েটি রেল পুলিশকে জানায়, জওয়ানেরা তাকে ঠান্ডা পানীয় খেতে দিয়েছিল। ওই পানীয়তে অ্যালকোহল মেশানো ছিল বলে পুলিশের ধারণা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দু’জন জওয়ান মিলে তাকে মোট ৬বার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছে মেয়েটি। তার দাবি, তৃতীয় জওয়ান ধর্ষণ না করলেও অন্যদের মদত দিচ্ছিল।
মধুপুর স্টেশনে কামরার মধ্যে মেয়েটির সঙ্গে যে জওয়ানকে দেখা গিয়েছিল, পুলিশ তাকে আটক করেছে। বয়স চল্লিশ বছর। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, ইস্টার্ন কম্যান্ডের ৭২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ান সে। তার অন্য দুই সহযোগী পলাতক। পুলিশ আসছে বুঝতে পেরেই সম্ভবত তারা কামরার অন্যত্র সরে যায়। মধুপুরে কামরাটি আর একেবারে খালি ছিল না। তল্লাশি-দল গোটা কামরার যে ভিডিও করেছিল, মেয়েটি তার মধ্যে দু’জনকে শনাক্ত করেছে। মেয়েটির দাবি, ওই দু’জনই ধর্ষক।
ঝাড়খন্ড পুলিশের তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘অভিযুক্তদের নাম-ঠিকানা-ছবি সবই পাওয়া গিয়েছে। শীঘ্রই তাদের ধরে তিন জনকেই হাওড়া জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হবে।’ মধুপুর জিআরপি ইতোমধ্যে ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে।
চলন্ত ট্রেনে জওয়ানদের হাতে নাবালিকা-ধর্ষণের অভিযোগ শুনে স্তম্ভিত সংশ্লিষ্ট সব মহল। সেনার এক মুখপাত্রের কথায়, ‘আমরা সব শুনেছি। ওই জওয়ানরা কারা, খোঁজখবর শুরু হয়েছে।’ ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে কে গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এ রকম ঘটে থাকলে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। সব পেশাতেই খারাপ মানুষ থাকে, সেনাবাহিনীও ব্যতিক্রম নয়।’
সূত্র: আনন্দবাজার
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।