- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- মানবপাচার রোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন
মানবপাচার রোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন
সফিউল আলম
প্রিন্টঅঅ-অ+
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এড. ফৌজিয়া করিম ফিরোজ দাবি করেছেন মানবপাচার রোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চালু করা প্রয়োজন।
তিনি বলেছেন, যে হারে মানবপাচার হচ্ছে সে তুলনায় মামলা নগণ্য। তারপরও এই মামলা গুলো দিনের পর দিন ঝুলে থাকছে। বিচারকরা মানবপাচারের মামলায় বিশেষভাবে নজর না দেয়ায় অভিযুক্তরা সহসায় জামিন পেয়ে যায়। এ পর্যন্ত মানবপাচারে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। তাই ‘বিশেষ ট্রাইব্যুনাল’ স্থাপন করে মানবপাচার মামলা গুলো পরিচালনা করা প্রয়োজন।
রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘শিশু পাচার প্রতিরোধে প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সুরক্ষা কাঠামো কার্যকর করার দাবীতে’ বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এড. ফৌজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, সারাদেশের বেশকিছু জেলায় ইতিমধ্যেই সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারীদের বিচরণ গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কক্সবাজার এসব জেলার মধ্যে অন্যতম। কক্সবাজার থেকে মানবপাচারের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সাগর পথে মানবপাচারের ক্ষেত্রে বহু রকম ভীতিকর ও করুন কাহিনী জন্ম হয়েছে। মূলতঃ বাংলাদেশের চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি উন্মূক্ত সীমান্ত পথ দিয়ে মানুষ বেচা কেনার ঘৃন্যতম বাণিজ্যের প্রধান টার্গেট নারী ও শিশু।
তিনি আরো বলেন, সাগর উপকূল সীমান্ত জেলা কক্সবাজার এখন মারাত্মক ক্রাইম জোনে পরিণত হয়েছে। বিশে^র যেসব দেশে রোহিঙ্গা প্রবেশ ঘটে সেখানে অন্যায় অপকর্মও বেশি হয়। তাই রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এই জেলার বেশিরভাগ অপরাধের সাথে রোহিঙ্গারা জড়িত। প্রতিদিন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ইয়াবা পাচারের নতুন নতুন মামলা দেখা যায়। এসবের বেশিরভাগই কক্সবাজারের মানুষের।
মানবপাচার মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি একটি হতাশাজনক বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি নারী ও শিশু পাচার ট্রাইব্যুনাল থাকলেও এসবের দৃশ্যমান কোন কাজ নেই। এটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হলেও পাচারকারীরা সহসায় জামিন পেয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি সহসায় জামিন পাওয়াকে আইনের মারপ্যাজ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি দীর্ঘদিন ধরে মানপাচার নিয়ে কাজ করছে। পাচারের শিকার নারী শিশু ও পুরুষদের সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি তাদের পূর্নবাসন করতে কাজ করে আসছে। ২০১৫ সালে সারাদেশে পাচারের শিকার ১৩২ জনকে পূর্নবাসন ও তাদের পরিবারের কাছে পৌছে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কক্সবাজারের রয়েছে ৩ জন।
তিনি বলেন, এক সময় মানবপাচার বলতে বুঝানো হত যৌনাচারের জন্য বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের বিদেশে পাচার করা। কিন্তু এখন মানবপাচারের চিত্র ভিন্ন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের বেকার যুবকদের প্রলোভন দেখিয়ে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া পাচার করছে মানবপাচারকারীরা। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়া শিশুদেরও পাচার করার মতও নেক্কার জনক ঘটনা দেখা গেছে।
তাই মানবপাচারের বিচার প্রক্রিয়া চালাতে হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে। যাতে প্রকৃত মানবপাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি নিশ্চিত হয়। এজন্য তিনি সরকারের কাছে কক্সবাজারে মানবপাচারের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করার দাবী জানান। পাশাপাশি একটি মনিটরিং সেল করারও উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার আইন কলেজের শিক্ষক এড. প্রতিভা দাশ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি এড. সাকি এ কাউছার, এড. রোজি, সিনিয়র লিগ্যাল অফিসার সাজ্জাতুন নেছা লিপি, কক্সবাজার অফিসের প্রকল্প পরিচালক এরশাদুজ্জামানসহ ভিকটিম, অভিভাবক, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।