পার্বতীপুর রেল হাসপাতালে মিলছে না সেবা
শত বছরের পুরনো পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতাল। এখানে আগত রোগীর সুচিকিৎসা হয় না ডাক্তার অভাবে, ঔষুধের অভাবে। আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসার কোন কিছু নেই হাসপাতালটিতে। তাছাড়া হাসপাতালের সবগুলো ভবন এত বেশি জরাজীর্ণ যে, সামান্য বৃষ্টি হলে পানি চুয়ে পড়ে। পানি পড়ার কারণে স্টোর রুমে ঔষুধ রাখা যায় না।
জানা যায়, ১৯০৮ সালে পার্বতীপুর রেল স্টেশনের অদূরে ২ একর জায়গার উপর পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতাল নির্মিত হয়। বৃটিশ আমলে নির্মিত ১৬ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা মোটামুখি ভাল ছিল। হাসপাতালটিতে ডাক্তারের পদ ৩টি। কর্মরত আছেন মাত্র ১ জন। ফার্মাসিস্টের পদ আছে ৩টি, আছেন মাত্র ১ জন। সবমিলে হাসপাতাল স্টাফ ২১ জন। ৪র্থ শ্রেণির জন্য স্টাফ কোয়ার্টার আছে ৩টি। থাকেন ওয়ার্ড এ্যাটেনডেন্ট ২ জন ও ১ জন ড্রেসার। আর ২য় শ্রেণি তথা ফার্মাসিস্টের জন্য নির্ধারিত কোয়ার্টারে থাকেন ১ জন পুলিশ স্টাফ।
হাসপাতালের আওতাধীন ১২শ’ কর্মকর্তা কর্মচারী এবং তাদের পোষ্যসহ ৭ হাজার লোকের এখানে চিকিৎসাসেবা পাবার কথা। এরমধ্যে হিলি থেকে চিলাহাটি, শ্যামপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৪৩ রেল স্টেশন রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ঔষধ পাওয়া যায় না। ডক্তারও থাকেন না নির্ধারিত সময় পর্যন্ত। সকাল ১০টায় ডাক্তার হাসপাতালে আসলেও ১২টার মধ্যে প্রাইভেট প্রাকটিসে চলে যান।
হাসপাতালের ওয়ার্ড দু’টিতে বিছানার তোষকগুলো দেখা যায় দুর্গন্ধময় ও স্যাঁতসেতে। সংস্কারের অভাবে দরজা-জানালা খুলে পড়েছে অনেক আগে।
সূত্র মতে জানা যায়, হাসপাতালে বছরে ২ লাখ টাকার মত ঔষধ আসে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে নগন্য। বর্তমানে ১ জন ডাক্তার ও ১ জন সিনিয়র নার্স ও ২ জন জুনিয়র নার্স দিয়ে চালানো হচ্ছে হাসপাতালটি। চেম্বারে গিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তার খায়রুল বাশারকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে দেখা মেলে একজন কর্মচারী বসে আছেন হাসপাতাল বারান্দায়। তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ডাক্তার আসেন নি। কখন আসবে বলতে পারবে না তিনি। আর একজন সুইপার চাঁদর গাঁয় দিয়ে বাহিরে বসে আছেন। অপরদিকে দেখা যায় ঔষধ রাখার স্টোর রুমে দরজায় সিলযুক্ত তালা। জনবলের অভাবে চিকিৎসা নিতে আসা স্বল্প আয়ের রোগীরা নিরুপায় হয়ে ভর্তি হচ্ছেন প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে। প্রয়োজনীয় ঔষুধের পরির্বতে অপ্রয়োজনীয় ঔষধ বেশি দেওয়া হয়। আর এ কারণে হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে।
হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের কোয়ার্টারগুলোতে পরিবার নিয়ে থাকা যায় না। এক রুমবিশিষ্ট এ কোয়ার্টরগুলোতে বর্ষাকালে পানি পড়ে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।