- হোম
- >
- মুক্তিযুদ্ধ
- >
- পার্বতীপুরে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
পার্বতীপুরে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শহিদুল হকের নেতৃত্বে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় এফএফধারী মুক্তিযোদ্ধা পার্বতীপুর প্রেসক্লাবে সমবেত হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানান।
তারা বলেন, পার্বতীপুরে সাকল্যে ৬৭০ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন। তারমধ্যে ১৭৬ জনের লাল মুক্তিবার্তায় নাম ও এফএফ নম্বর নেই। তা সত্বেও এরা ৩শ’ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা লিখে দিয়ে ভাতার টাকা উত্তোলন করে আসছেন। মুচলেকায় তারা অঙ্গীকার করেন আগামীতে যাচাই বাছাইকালে তাদের নাম বাদ পড়ে গেলে সমুদয় টাকা সরকারের কোষাগারে ফেরত দিবেন। মুচলেকা দিয়ে টাকা উত্তলনকারীদের মধ্যে রয়েছেন সামছুল হক পিতা মৃত ছাইদুল হক গ্রাম সাকোয়াপাড়া (গেজেট নং-৩৫০০), ছাবেদ আলী পিতা মৃত ইছহাক আলী গ্রাম ছয়ঘরিয়া (গেজেট নং-২৯০৮), ফারাজ উদ্দিন পিতা মৃত শাহার উদ্দিন গ্রাম জাহানাবাদ (গেজেট নং-৩০৩৬) ও আব্দুল কাফি পিতা মৃত আঃ বাকী গ্রাম গোবিন্দপুর (গেজেট নং-৩৫৭৫)।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, দুই তালিকা মিলে অন্ততঃ ২৭০ জনের নাম অনর্ভুক্ত রয়েছে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি, ভারতে যাননি এবং মুক্তিযুদ্ধকালে কারও কারও বয়স ২ থেকে ৫ বছর ছিল। এছাড়াও, ২১ জনের নাম ঠিকানা পাওয়া গেছে যারা মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার ছিলো, পাকিস্তানি সৈন্যদের সবরকম সহায়তা দিয়েছে এবং আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। আর মুক্তিযুদ্ধকালে অপ্রাপ্তদের সংখ্যা ১০জন।
এর মধ্যে হরিরামপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের মৃত বনিজ উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান (গেজেট নং-২৬০৪)। ১৯৬৯ খ্রীষ্টাব্দের ১ মার্চ জন্ম তারিখ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২বছর ১মাস। মোঃ নূরুল ইসলাম পিতা মোসলেউদ্দিন, গ্রাম জাহানাবাদ (গেজেট নং-৩৫২৮), জন্ম ১৯৬৭সাল।
মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়ে তিনি রেলওয়েতে চাকুরী করছেন। আর একজন মিজানুর রহমান, পিতা মৃত মোহসীন আলী, গ্রাম কালিকা বাড়ি, তার জন্ম ১৯৬৭ সালের ৩০মার্চ। তিনি শহরের মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। আমজাদ হোসেন পিতা মৃত শরীফ উদ্দিন, গ্রাম খাজের দামাল, ১নং বিলাই চন্ডি ইউনিয়ন (গেজেট নং-৩১০৭), স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৫ বছর ও আমিনুল হক সরদার, পিতা মৃত বছির উদ্দিন, গ্রাম বাঘাচোড়া, বেলাইচন্ডি ইউনিয়ন (গেজেট নং- ৩৪৭৫) যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৬ বছর।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মোঃ জহুরুল হক, আঃ সামাদ, আঃ সালাম, মোঃ ইদ্রিস আলী ও তহমিদুর রহমান কারী অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, আমাদের মা বোনদেরকে পাকিস্তানের সেনাদের হাতে তুলে দিয়েছিল, সম্ভ্রমহরণে ভূমিকা রেখেছিল এবং নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তারা যখন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করে তখন মনের ভেতর যে অবস্থার সৃষ্টি হয় সে কথা বলে বোঝানো যাবেনা। তাছাড়া, মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এদের কাফন দাফন কিংবা সৎকার করার সময় আমাদের মাথা হেট (নিচু) হয়ে যায়। রাজাকারদের তালিকা থেকে শুধু বাদ দিলে হবেনা, এদের তালিকাভূক্তিতে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদেরসহ বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন তারা।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পার্বতীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার অ্যাডভোকেট আবদুল হাই বলেন, সবাইতো আর এক জায়গায় মুক্তিযুদ্ধ করেননি। এ কারণে সবাইকে সবার চেনার কথা নয়। তবে আগামী ১০ জানুয়ারী পার্বতীপুরে যাচাই বাছাই কার্যক্রম শুরু হলে সে সময় উপযুক্ত প্রমাণপত্র দাখিল করতে না পারলে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দিনাজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ সাইদুর রহমান জানান, আগামী যাচাই বাছাই কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সঠিক তালিকা প্রনয়ণে তিনি ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান তালিকায় রাজাকারদের নাম অর্ন্তভূক্ত থাকার ব্যপারটিকে তিনি ন্যাক্কারজনক বলে অভিহত করেছেন।
অন্যদিকে, পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমান আগামী যাচাই বাছাই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সঠিক তালিকা প্রনীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।