রামগতির লোকমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের লোকমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের বেহাল অবস্থার মধ্যেও চলছে ঢিলেঢালাভাবে শিশুদের পাঠদান।
টিনশেডের ঘরটি দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে বেহাল অবস্থা হলেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিতে হচ্ছে। যেকোন সময় ঝড়োহাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই বিদ্যালয়টির। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে হচ্ছে শিক্ষকদের। পাঠদানের অনুপযোগী শ্রেনিকক্ষ ও ভবনের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের যাওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছে। আর সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান দিতে পাড়ছে না শিক্ষকরা। শ্রেনিকক্ষে প্রয়োজনীয় বসার টেবিল (বেঞ্চ) না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে মেঝে বসে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
পাশাপাশি অনেকটা চিন্তিত ও শস্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবক মহল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন টিনশেডের একাডেমিক ভবনটি কোনরকমে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা-জানালা কিছুই নেই এবং যে কোন মুহুর্তে মাথায় ভেঙ্গে পড়ার আশংকা নিয়ে ক্লাশ করছে ৪২৫ জন শিক্ষার্থী। আবার একটু বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি, ক্লাশ করার কোন উপায় নেই।
জানা যায়, ২০০৭ সালে ওই বিদ্যালয়টি কমিউনিটি ডেভেলাপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) এর নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছিল। কোডেক বিগত ২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই বেসরকারি বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে। ২০১৩ সালে উক্ত বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়, যা বর্তমানে লোকমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে সু-পরিচিত।
উক্ত বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা জানান, গত ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে বিদ্যালয়টি গেজেট হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সরকারি বেতন পাইনি। বিদ্যালয়টিতে সব সমস্যায় জর্জরিত। কোডেক পরিচালনা করাকালে আমরা সম্মানী ভাতা পেলেও এখন তাও পাই না। সরকারি বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠদান করলেও বেতনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা না থাকায় নানান সমস্যার মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগমের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়া সত্বেও বাধ্য হয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। এছাড়াও আমাদের বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি এবং ফিডিং প্রোগ্রাম চালু না থাকায় এখানকার অনেক ছাত্রছাত্রী ঝরে যাচ্ছে।
কমিউনিটি ডেভেলাপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) এর চরগাজী শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ নাজিম উদ্দিন জানান, রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নে ২০০৭ সালে নদী ভাঙন কবলিত অসহায় ৩০০ পরিবারকে কোডেকের নিজস্ব অর্থায়নে জমির দলিল হস্তান্তর সহ বসতি নির্মাণ করে দেয় এবং তাদের ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করার জন্য অত্র এালাকায় একটি বেসরকারি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। অসহায় ৩০০ পরিবার থাকার আশ্রায়ন প্রকল্পটি কোডেক কলোনী নামে সু-পরিচিত। নদী ভাঙণ কবলিত অসহায় ৩০০ পরিবারের শিশুদের লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে কোডেক ওই বিদ্যালয়টি ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালনা করেছিল।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা(ভার:) মুজিবুর রহমান বলেন, রামগতি উপজেলায় ৩য় পর্যায়ের ৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে লোকমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি। ওই বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি এবং ফিডিং প্রোগ্রাম চালু বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষকদের বেতন ও একাডেমিক ভবনের বিষয়ে তিনি জানান, শিক্ষকদের বেতন পেতে ও একাডেমিক ভবন নির্মানে অনেক সময় লাগবে, তবে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।