কুড়িগ্রামের ৩১ চরে নেই ডাক্তার : কবিরাজের ঝাড়ফুঁক'ই ভরসা
ব্রম্মপুত্র, দুধকুমার ও শংকোষ নদনদী দ্বারা বেষ্টিত কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ৩১টি চরে কোন চিকিৎসক নেই। ওই ইউনিয়নটিতে একটি সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও দু’বছর ধরে সেখানে ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু হানিফ সরকার বলেন, ৫৬ বর্গকিলোমিটার দৈঘ্য নারায়নপুর ইউনিয়নের ৩৮ হাজার মানুষের জন্য একটি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেদ্রের বিশাল অবকাঠামো থাকলেও সেখানে কোন ডাক্তার নাই। কোন মাসে একজন পিয়ন এসে এক আধ ঘন্টা অফিস খোলে। ফলে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন।
নাগেশ্বরী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আনছার আলী জানান, নারায়নপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নদনদী দ্বারা বেষ্টিত ও দুর্গম চর এলাকায় হওয়াতে কোন ডাক্তার সেখানে যেতে চান না। কেউ গেলেও দু’মাসের বেশি থাকেন না।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য সরকারি বরাদ্ধ তাহলে কী করা হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আনছার আলী বলেন- ‘একজন ভিজিটর দায়িত্বে আছেন। তিনি মাঝেমাঝে যান। আমাকে ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা দেখতে হয়। আপনি বলুন সবখবর রাখা কি আমার একার পক্ষে সম্ভব?
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেই ভিজিটরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাঝিয়ালী চরের শকমত আলী, ঝুনকি বিবি ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল ও কন্যামতি চরের বানভাসি বেগম, মজিরুন বিবি এবং নারায়নপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী জানান, ৩১টি চরে স্থায়ী কোন চিকিৎসক নেই। চরের মানুয়ের অসুখ-বিসুখ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিজেরাই করেন।
চৌদ্দঘুরি চরের বাছেদ আলী, ও সেনোদ্দি মোল্লা জানান, অসুখের প্রাথমিক চিকিৎসা আমরা স্থানীয় কবিরাজ ও মৌলভীর পানিপরা দিয়ে শুরু করি। আবার চরের কিছুলোকের বাড়িতে কয়েক পদের ঔষুধ ও স্যালাইন মজুদ থাকে। এর মধ্যে জ্বর সর্দ্দি, মাথা ব্যথা, আমাশয়, ডায়রিয়া, চোখের মলম অন্যতম।
পাখিউড়ার চর জামে মসজিদের ঈমাম কারী শামসুল হক জানান, চরের মানুষ ছোটখাটো রোগব্যধিতে ঔষুধের পরিবর্তে গ্রাম্য মৌলভীদের পানিপড়া ও কবিরাজের ঝাড়ফুঁকে বেশি অভ্যস্থ্য। কবিরাজের ঝাড়ফুঁকে ভালো না হলে পরে রোগীকে নাগেশ্বরী ও কুড়িগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ জয়নাল আবেদীনের মতামত নিতে মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।