৯ জন মিলে এক পিএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম
সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই করছে। কোচিং ছুটি হলো। কোচিং শেষে বাড়ি ফিরছিল রায়হান (১১)। এদিকে ৯বন্ধু পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে ছিল রায়হানকে মারার জন্য। তারাও চলতি প্রাইমারী স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষা্র্থী ও একই স্কুলের ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রায়হান জামুডাঙ্গা ব্রীজ নামক স্থানে পৌঁছিলে ঐ নয় বন্ধু তাকে সু-কৌশলে ডেকে ঘাঘট নদীর নির্জন তীরে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে কোন কথা নয়, সবাই মিলে রায়হানের বুকে, পেটে, মাথায়, কিল, ঘুষি মারতে শুরু করে। এরপর তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৯বন্ধু আরো বেশি চড়াও হয়ে ঘাঘট নদীতে ফেলে দেওয়ার মতো পরিকল্পনাও করে। এ সময় রায়হান সঙ্কা হারিয়ে ফেলে, এরপর সে আর কিছুই বলতে পারেনি।
এদিকে ৯ জনের হত্যার পরিকল্পনা বাস্তব রূপ নিতে পারেনি। সেই সময় স্থানীয় এক মহিলা ছালেমা বেওয়া ঐ স্থানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি ঘটনাটি দেখে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে। পরে ৯ জনের মধ্যে ৮ জন পালিয়ে যায়। জনতার হাতে ধরে পড়ে আশা মিয়া (১২) নামের মূল হোতা ছেলেটি।
পরে নির্যাতনকারী আশাকে ও নির্যাতিত রায়হানকে একত্রিক করে কোচিকন্ঠ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সভাপতি মন্ডলী ও জামালপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। এ ঘটনায় রায়হানের বড় ভাই ফজলে রাব্বী সাদুল্যাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। যাহার নম্বর- ৯৫৪, তারিখঃ ২৬-১১/২০১৫ইং।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সাদুল্যাপুর উপজেলার জামুডাঙ্গা ব্রীজ এলাকার ঘাঘট নদীর তীরে। এ ঘটনায় ওই স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে নানা ভয়-ভীতি বিরাজ করছে।
নির্যাতনকারীরা হলো, আশা (১২), হযরত (১১), আরাফাত (১১), মল্লিক (১২), সৌরভ (১০), রাফি (১১), রাশেদ (১২), মমিনুল (১২) ও আসান (১২) তারা সবাই চলতি পিএসসি পরীক্ষার্থী ও কোচিকণ্ঠ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ছাত্র।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জামালপুর ইউনিয়নের (ইউ,পি) চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম রেজা জানান, দু’জনকে ডেকে সব শুনে যা বুঝা গেল, নয় জন বন্ধু মিলে তাকে মারপিট করার জন্য নদীর তীরে নিয়ে যায়। কিন্তু তারা এতোটাই চড়াও হয়েছিল যে কোন বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারতো। এমনকি হত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারতো।
চেয়ারম্যান আরো জানান, যেহেতু বৃহস্পতিবার তাদের পরীক্ষা আছে। সেহেতু আগামি ৩০ নভেম্বর পিএসসি পরীক্ষা শেষে দশ জনের অভিভাবককে ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করা হবে বলে জানান তিনি।
নির্যাতিত রায়হানের বাবা মো. আব্দুল ওহাব জানান, তার সন্তানকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তারা নদীর তীরে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারপিট করেছে। তিনি এই নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবিসহ তার সন্তানের নিরাপত্তার দাবি জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।