সূবর্ণচরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী'কে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম
নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের আটকপালিয়া বাজার এলাকায় গৃহবধূ রোকসানা আক্তার শিমুকে যৌতুক না পেয়ে তার স্বামী ফজলে এলাহী হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন।
২৫ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে নারীনির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
২০০৪ সালের ৩১ মার্চে নোয়াখালীর সদর উপজেলার পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের মেয়ে রোকসানা আক্তার শিমুর সাথে জেলার সূবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের আটকপালিয়া বাজার এলাকার গ্রাম্য ডাক্তার নুরুল হকের ছেলে ফজলে এলাহীর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ শিমু জানান, বিয়ের পর থেকে তাদের সংসার জীবন ভালোই ছিলো। তাদের ঘর আলোকিত করে একে একে তিন সন্তানের আগমন ঘটে। তাহমিনা (১০), ফাতেমা এলাহী (৬) ও রিশাদ এলাহী (৪)। এরপরই সুখের সংসারে হানা দেয় স্বামীর মাদকাসক্ত ও উশৃঙ্খল জীবন। শুরু হয় অশান্তি।
তিনি বলেন, প্রথম দিকে আমি তাকে এসব খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বিভিন্ন সময়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে এবং মাদকের টাকার জন্য আমার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে আমার বাবার সরকারি চাকুরী থেকে প্রাপ্ত এককালীন টাকা ও সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার জন্য আমার মাকে হুমকি দিতে থাকে। টাকা ও সম্পত্তির ভাগ না দেওয়ায় দিনকেদিন তার নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এরই জের ধরে সোমবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ১২টার দিকে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকা রড় ও লাঠি দিয়ে এলাপাতাড়ি পিটাতে থাকে। এসময় আমার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দরজা বন্ধ থাকায় ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এসময় আমার বড় মেয়ে তাহমিনা আমাকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও আঘাত করে সে।
একপর্যায়ে সে ঘরে থাকা দা নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসলে শ্বশুর বাড়ির অন্যান্য লোকজন দরজা ভেঙ্গে আমাকে উদ্ধার করে।
পরে মঙ্গলবার সকালে আমার বাবার বাড়ির লোকজন আমাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে আহত শিমুর মা রহিমা বেগম মনি অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের জামাই ফজলে এলাহী নেশার টাকার জন্যই সে আমাদের কাছে যৌতুকের টাকা ও সম্পত্তির ভাগ দাবি করে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে সে আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে তার বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছে। তাদের দ্রুত লিখিত অভিযোগ দিতেবলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।