দেশকে বিদেশ বানিয়ে ভারত চলে গেলেন ১৫২ জন
জন্মস্থান বাংলাদেশকে বিদেশ করে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নতুন দেশ ভারতে চলে গেলেন ৩০টি পরিবারের ১৫২ জন। গত রবিবার ১৪টি পরিবারের ৪৮ জন ও সোমবার দুপুরে চিলাহাটি হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয় ভারত গমন করতে পঞ্চগড় জেলা দেবীগঞ্জ উপজেলার ২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ২৮টি পরিবারের ১৪৭ জন। গত ৩ দিনে এ সীমান্ত দিয়ে ভারত গমন করেছে ৭২টি পরিবারের ৩৪৭ জন।
সকালে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে পুলিশ ও বিজিবি পাহারায় তাদেরকে চিলাহাটি নিয়ে আসা হয়। ৪টি বাসে ভারতীয় গমনকারী সদস্যরা ও ৬টি ট্রাকে রয়েছে পরিবারগুলোর মালামাল। শেষ বিদায়ক্ষণে আত্মীয় স্বজন এবং বিদায় ভারতীয়রা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অসংখ্য উৎসুক জনতা ও বেদনার্ত হয়ে পড়েন।
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের আব্দুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিলুপ্ত ছিটমহলের ভারত গমনকারীদের ইমিগ্রেশন কাজ সম্পন্ন করা হবে। সেখানে দুইটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। ইমিগ্রশন কাজ সম্পন্ন করা শেষে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের কাছে ১৫২জনকে হস্তান্তর করা হয়। পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বিলুপ্ত ১নং বিলুপ্ত দহলা খাগড়াবাড়ি ৩০টি পরিবার সদস্যরা ভারত গমন করেন। ভারতীয় গমনকারীদের মধ্যে পুরুষ ৬৩জন ও মহিলা ৫০জন, ২ নবজাজতক সহ শিশু ৩৯জন সদস্য রয়েছে। চিলাহাটি অস্থায়ী ক্যাম্পে ইমিগ্রেশন শেষে দুপুর সোয়া ২টায় ভারতীয় কতৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের ভারতীয় দুতাবাসের ফাষ্ট সেক্রেটারী রমাকান্ত গুপ্তা, নীলফামারীর সহকারী কাস্টমস কমিশনার হুমায়ুন হাফিজ, ডোমার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস রাজ্জাক বসুনিয়া, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা, দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, বিজিবির ৫৬ ব্যাটলিয়ানের লেঃ কর্ণেল গোলাম সারওয়ার, ডোমার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, চিলাহাটি তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মনছুর আলীসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে নবাগত ভারতীয়দের বরণ করেন কুচবিহারের এডিএম আয়শা রাণী ও এডিএম রঞ্জন ঝাঁ। এদিকে ভারত গমনে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের গাড়ির বহরে নানী কহিনুর বেগম (৫৫) ও নাতনী সুরাইয়া আক্তার সুমি (৮) নিহত হবার ঘটনায় পরিবারটিকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি আব্দুর রউফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুদানের অর্থ প্রদান করা হয়। ডোমার উপজেলা পরিষদ থেকে ২ পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। অনুদান গ্রহন করেন নিহত কহিনুর বেগমের স্বামী ছমির উদ্দিন বুধারু ও নিহত সুমাইয়া আক্তার সুমির পিতা সাহাদাত হোসেন। এদের বাড়ি ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের প্রামানিকপাড়া গ্রামে। এ সময় ডোমার উপজেলা পরিষদ চেযারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বসুনিয়া, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা, দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম, ভোগডাবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের, ঢাকাস্থ্য ভারতীয় হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারী রমাকান্ত গুপ্তা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুর সোয়া দুইটার সময় চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটমহলের দ্বিতীয় দফায় ১৪৭জন ভারত যাওয়ার সময় ডাঙ্গাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সামনে মালামাল বহনকারী একটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঐ নানী-নাতনী নিহত হয়েছিল।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।