সংসদে পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের আনার দাবি ইমরানের
যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগে আজ সকাল ১০টা থেকে অবস্থান নেয় গণজাগরণ মঞ্চ। গতকাল যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের ও আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর উপলক্ষে গণজাগরণ মঞ্চের বিজয় র্যালির পূর্বে জামাতের ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে অবস্থানের ঘোষণা দেয় গণজাগরণ মঞ্চ।
বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ থেকে হরতালবিরোধী মিছিল বের করে গণজাগরণ মঞ্চ। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে ফিরে আসে।
অবস্থান কর্মসূচিতে ইমরান এইচ সরকার বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের ধারাবাহিক বিচারে দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তবে এ বিচারে যেন কোনোভাবেই দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া চলমান আছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। যাদের রায় হয়েছে সেসব রায় দ্রুত কার্যকর করে যুদ্ধাপরাধীমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধের বিচারে যত বিলম্ব হবে, যুদ্ধাপরাধীরা এবং তাদের সহযোগীরা দেশে খুন, সহিংসতা করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে যাবে। আর কোনো কালক্ষেপন না করে দ্রুত যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নিতে হবে”।
কুখ্যাত দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তাদের সন্তানদের ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, “একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা এদেশের মানুষের উপর নির্মম অত্যাচার করেছে, হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মত অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হওয়ায় সারা দেশের মানুষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। রাজাকারদের আস্ফালনের উপযুক্ত জবাব বাংলাদেশের মানুষ দিয়েছে। রাজাকারের সন্তানদের এই ঔদ্ধত্বের জবাবও সময়মত দেওয়া হবে”।
সাকা-মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তানের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, “পাকিস্তান তার দালালদের রক্ষা করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর হলেই পাকিস্তানের বক্তব্য-বিবৃতি থেকে বোঝা যায়, এই যুদ্ধাপরাধীরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজীবন পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তান নাক গলানো বন্ধ না করলে কাদের মোল্লার রায়ের পর যেভাবে মানুষ পাকিস্তানের বক্তব্যের প্রতিবাদে এম্বাসি ঘেরাও করতে রাজপথে নেমে এসেছিল, সেভাবে প্রয়োজনে আবারও বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ধৃষ্টতার জবাব দেবে”।
সংসদের চলমান অধিবেশনে পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান এইচ সরকার। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করে পাকিস্তান যে বিবৃতি দিয়েছে, তা প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সাথে সকল কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করতে হবে”।
জামাতের ডাকা হরতাল প্রতিহতের দায়িত্ব সাধারণ জনগণ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে বলে জানান ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেন, “দেশের সর্বস্তরের মানুষ যার যার কাজে যোগদান করে, রাস্তায় বেরিয়ে জামাতের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততার কারণে হরতাল প্রতিহত করতে কোনো সংগঠিত শক্তির প্রয়োজন পড়েনি”।
যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যুদ্ধাপরাধীরা এদেশের মানুষকে শোষণ করে তৈরি করা তাদের অঢেল সম্পদ এদেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে কাজে লাগাচ্ছে। তাদের মদদে এদেশে জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী বেঁচে আছে। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে শহিদ পরিবার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে”।
গান-কবিতা-স্লোগানের মধ্যদিয়ে হরতালবিরোধী অবস্থান চালিয়ে যায় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।