বাসে বই বিক্রি করে কর্মী সংগ্রহ জেএমবির
জেএমবির সদস্যরা রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ছদ্মবেশে বাসে বই বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। এভাবে তারা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে জেএমবিতে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছে। বিনিময়ে ওই সদস্যরা সংগঠন করার পাশাপাশি নিজের পরিবারকেও সাবলম্বী করে তুলছে। তবে বই বিক্রি করা তাদের আয়ের মূল উৎস নয়, সদস্য সংগ্রহ করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ১১ জেএমবি (জঙ্গি) সদস্য গ্রেপ্তার হয়। আদালতের নির্দেশে ওই ১১ জঙ্গিকে দ্বিতীয়বারের মতো রিমান্ডে আনে গোয়েন্দা পুলিশ। রিমান্ডে থাকা জঙ্গিরা এ সব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার মঞ্জুরুল মোর্শেদ।
তিনি জানান, গ্রেপ্তাকৃত ১১ জঙ্গির মধ্যে কয়েকজন রাজধানীতে বাসে বই বিক্রি করতো। বই বিক্রির সময় তারা মানুষকে টার্গেট করতো। টার্গেটকৃত সেই ব্যক্তিকে বুঝিয়ে জেএমবিতে আনার চেষ্টা করতো। এভাবে কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে জেএমবির সদস্য বানাত। তেমনি গ্রেপ্তাকৃতদের মধ্যেও এ সব পেশার লোক রয়েছে।
সহকারি কমিশনার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গি সদস্যরা জানিয়েছে, বাসে হকারি করে এখনো অনেকে বই বিক্রি করছে। তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। এ রকম কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি জানান, মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর ডা. নজরুলের নেতৃত্বে জেএমবি পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু সাইদুরের ছেলে ফাহিম আদর্শগত দ্বন্দ্বের কারণে নজরুলের নেতৃত্ব মেনে নিতে চাননি। পরবর্তীতে রিফাত জেএমবির নেতৃত্ব দিতে থাকেন। কিন্তু রিফাত গোয়েন্দা জালে আটকা পড়ার পর নজরুলসহ অন্যদের নাম বেরিয়ে আসে। নজরুল গ্রেপ্তার হওয়ার পর আরিফ জেএমবির নেতৃত্বে আসেন। গোয়েন্দারা গোপন খবরের ভিত্তিতে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে আরিফসহ ১১ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে।
১১ জঙ্গির বরাত দিয়ে এসি জানান, তারা রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল। দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ১১ ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিন রিমান্ড যথেষ্ট ছিল না। এর মধ্যে আবার সব গোয়েন্দা সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করে। কাজেই আগের দুদিনের রিমান্ডে জঙ্গিদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানা সম্ভব হয়নি। এমনকি জঙ্গিরা নিজের নাম ঠিকানা সম্পর্কেও ভুল তথ্য দিয়েছিল। এবার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এখন তাদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ নভেম্বর মধ্যরাতে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে ১১ জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরা হলেন আরিফ ইবনে খায়ের, বাবু মুন্সী, খোরশেদ আলম, ওমর ফারুক, আলহাজ মিয়া, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল বাছেদ, সুজাত, আজাহার আলী, ফরহাদ ও মিজানুর রহমান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।