পিরোজপুরে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও সাশ্রয়ী গুটি ইউরিয়া সারের ব্যবহার। বোরো, আউশ ও আমন ধান চাষের গত দু ’মৌসুমে পিরোজপুর জেলার ৭ উপজেলায় ও ৩টি পৌর ও ৫২টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার চাষিদের গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ১ হাজার ২৫২ মেট্টিক টন ইউরিয়া সার। 

পরিবেশ বান্ধব এই গুটি ইউরিয়া জনপ্রিয় করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পিরোজপুরের জেলা ও উপজেলা কৃষি অফিসসমূহের কর্মকর্তারা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন এবং প্রদর্শনী ক্ষেত তৈরি করে গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে চাষিদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

পিরোজপুরের কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে জেলায় ১০ হাজার ১শত ১৯ হেক্টরে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে এখানে সাশ্রয় হয়েছে ৩৪৪ মেট্টিক টন সার। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ১৩ হাজার ৩শ’ হেক্টরে বোরোর চাষ করা হয়। গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে সাশ্রয় হয়েছে ৪২৮ মেট্টিক টন সার। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে আউশ ধানের চাষ হয় ২ হাজার ৫২০ হেক্টরে। সাশ্রয় হয় ৮৬ মেট্টিক টন সার। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৪ হাজার ১শত ৬০ হেক্টরে আউশ ধানের চাষ করা হয়। এখানে সাশ্রয় হয় ১শত ৫৫ মেট্টিক টন । ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ৪ হাজার ৯৪৫ হেক্টরে আমন চাষে সাশ্রয় হয় ১৬৬ মেট্ট্রিক টন এবং ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২ হাজার ১ শ’ হেক্টরে সাশ্রয় হয় ৭৩ মেট্টিক টন ইউরিয়া সার। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এর কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুণ রায় বাসসকে জানান, গুড়া ইউরিয়া জমিতে ছিটিয়ে দেয়ার সময় বাতাসে অর্ধেক পরিমাণ বিনষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া জমির পানিতে মিশে মাছসহ জলজ প্রাণীর বংশবিস্তারে বিঘ্ন ঘটায়। গুটি ইউরিয়া মাটির ৫-৬ ইঞ্চি গভীরে প্রয়োগ করা হয় বিধায় পরিবেশ এবং জলজ প্রাণীর কোন ধরনের ক্ষতি হয় না এবং চাষিদের কষ্টের, অর্থেরও যথেষ্ট সাশ্রয় হয়। 

ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে বেসরকারি সংস্থা আপি কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করন শীর্ষক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে এবং কিস্তিতে সার বিক্রেতাদের মধ্যে গুড়ো ইউরিয়া থেকে গুটি ইউরিয়া তৈরির মেশিন সরবরাহ করেছে। পিরোজপুর জেলায় এখন এই মেশিনের সংখ্যা ৩৫টি।